নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছরের রেশ ধরে রেখেই নতুন বছর পুঁজিবাজারের পথচলা শুরু হয়েছে। এতে বছর শুরুর প্রথম সপ্তাহেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। আলোচিত সপ্তাহটিতে বাজারের সব সূচক বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। আর টাকার পরিমাণে লেনদেন দ্বিগুণ হয়েছে উভয় পুঁজিবাজারে।
বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ৪৮ হাজার ২৩০ কোটি পাঁচ লাখ ২২ হাজার টাকা। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় চার লাখ ৭০ হাজার ২৭০ কোটি তিন লাখ ৮৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বিনিয়োগকারীরা ২২ হাজার ৩৯ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা মূলধন ফিরে পেয়েছেন।
গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৯ হাজার ৯৫১ কোটি ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৮৭০ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহ থেকে চার হাজার ১৪৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৪ হাজার ৯৬১ টাকা বা ৭১ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল পাঁচ হাজার ৮০৩ কোটি ৪৬ লাখ ২৩ হাজার ৯০৯ টাকার।
ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৯৯০ কোটি ২৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭৭৪ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৪৫০ কোটি ৮৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৫৩৯ কোটি ৩৭ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৭ টাকা বেশি হয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২১৯ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা চার দশমিক ০৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৬২১ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ২৩ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮৪ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা চার দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ২৬৫ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৪৮ দশমিক ০৭ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৬৫টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২১৫টির বা ৫৮ দশমিক ৯০ শতাংশের, কমেছে ১১৪টির বা ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির বা ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪৮৩ কোটি ৭১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭১ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২২৯ কোটি ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৩৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ২৫৪ কোটি ২৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫ টাকা বা ১১০ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৫৬ দশমিক ০৫ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৪৮ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ৪৫৬ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৮৫ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৩৪৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৭৭ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ৫৭ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং সিএসআই ২৫ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৯ হাজার ৮৫৯ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে, ১২ হাজার ৭৭১ দশমিক ৬২ পয়েন্টে, এক হাজার ২১৭ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে এবং এক হাজার ৪৪ দশমিক ৪১ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩২৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২০৬টির বা ৬৩ দশমিক ১৯ শতাংশের দর বেড়েছে, ৮৭টির বা ২৬ দশমিক ৬৮ শতাংশের কমেছে এবং ৩৩টির বা ১০ দশমিক ১২ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিদায়ী বছরের শেষ সপ্তাহের মতো নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেও দেশের বৃহৎ পুঁজিবাজার ডিএসইতে সাপ্তাহিক গেইনারের শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে রবি আজিয়াটা।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে রবি আজিয়াটার শেয়ারদর ছিল ২৯ দশমিক ৮০ টাকায়। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়ায় ৪৭ দশমিক ৬০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৭ দশমিক ৮০ টাকা বা ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে রবি আজিয়াটা ডিএসইর সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে। ডিএসইতে সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জিবিবি পাওয়ারের ৪৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ, একটিভ ফাইনের ৩৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৩৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৩৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ২৭ দশমিক ১৪ শতাংশ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ২৫ দশমিক ৮০ শতাংশ, এসএস স্টিলের ২৩ দশমিক ৯১ শতাংশ, সাইফ পাওয়ারটেকের ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং পাওয়ার গ্রিডের শেয়ারদর ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে।