সুবর্ণচরে তরমুজ চাষে ক্ষতি কাটানোর আশা কৃষকের

আকাশ মো. জসিম, নোয়াখালী: নোয়াখালীর চরওয়াপদার বাদামতলীর চাষি নুর ইসলাম মিয়া। তিনি বলছিলেন, ‘গত বছর আবহাওয়ার কারণে আশানুরূপ ফলন পাইনি। আশা করছি, এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে হয়তো গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’ চাষি নুরুল ইসলামের মতো এমন স্বপ্ন দেখছেন আরও অনেক চাষি।

জানা গেছে, জেলার সুবর্ণচর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে তরমুজ চাষে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। এ বছর এ উপজেলায় প্রায় কয়েক সহস্র হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাদামতলী, থানার হাট, বগার বাজার, বৈরাগী বাজার, সেলিম বাজার, যোবায়ের বাজার, আনছার মিয়ার হাট ও চরবাটা এলাকার তরমুজচাষিরা এরই মধ্যে জমি চাষাবাদ করে বীজ বপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ বছর বীজের দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশি বলে জানান তারা।

জেলা শহরের কয়েকটি বীজ দোকানে এক কৌটা ১০০ গ্রাম বিগ ফ্যামিলি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, জাগুয়া আড়াই হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা ও এশিয়ান বীজ দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চরওয়াপদা, চর আমানউল্লাহ, চরবাটা ও চরজুবলি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা মাঠে কাজ করছেন। তরমুজের বীজ বপনের জন্য জমি চাষাবাদ করে প্রস্তুত করছেন। ঘরের নারী ও শিশুরাও বসে নেই। তাদেরও পুরুষের পাশাপাশি ক্ষেতে কাজ করতে দেখা গেছে।

চরওয়াপদা ইউনিয়নের বাদামতলী এলাকার তরমুজচাষি আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি এ বছর পাঁচ একর জমিতে বর্গাচাষি হিসেবে তরমুজ চাষ করেছি। তবে বীজের দাম বেশি থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ বেশি হবে। তবুও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জমি মালিকের বর্গামূল্য ও ব্যবসায়ীদের আগাম দেনা পরিশোধ করতে পারব।’

সুবর্ণচর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর তরমুজের যে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল, এবার তার চেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। বেলে-দোআঁশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ উপজেলায় রসালো তরমুজ চাষ ভালো হয়। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় পুরো জেলার মধ্যে তরমুজের ফলন ভালো হয়। তবে এ বছর ওই এলাকার অনেক চাষি লোকসানের ভয়ে তরমুজ চাষ করছেন না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ বছর তরমুজচাষির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। সুবর্ণচর উপজেলায় এ বছর কয়েকশ কৃষক তরমুজ চাষ করছেন, যা অন্য বছরের চেয়েও কম।’ তবে তিনি মনে করেন, এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বড় ঘটনা না ঘটলে তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। একই আশা ব্যক্ত করেছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেনও।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০