প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার প্রধান আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হুমায়ুন কবীর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, বিএনপি নেতা রিপন ও আরিফকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি ৪৭ আসামিকে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল মুনির হোসেন বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে সাতক্ষীরা কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। এই রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাহানারা পারভীন বকুল বলেন, ‘হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঘটনার দিন সাতক্ষীরাতেই ছিলেন না। আমরা পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট আদালতে উপস্থাপন করার পরও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ রায় দেয়া হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য এ রায় দিয়েছে। মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।’
মামলার রায়কে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে ৩৪ আসামিকে আনা হয় সাতক্ষীরা আদালতে। এরপর রায় ঘোষণা শেষে সাড়ে ১০টার দিকে পুনরায় আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। কারাগারে নেয়ার প্রাক্কালে বিএনপির নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, ‘আমি নির্দোষ। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে এ রায় দেয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় ফিরে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কলারোয়ায় পৌঁছালে একটি বাস রাস্তার মাঝখানে আড় করে ব্যারিকেড দিয়ে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও তার সফরসঙ্গী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়কসহ কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের নেত্রী আওয়ামী লীগ নেতা ফাতেমা জামান সাথী, আবদুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল এবং শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। একই সময় সাতক্ষীরার বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও এক ডজন নেতাকর্মী হামলার শিকার হন।
এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশি আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।