ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন

মুশফিক-মিথুনের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক: মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের বোলাররা আতঙ্ক না ছড়ালেও রানের জন্য ধুঁকেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু দ্বিতীয় দিন স্বাগতিক বোলারদের পাত্তা দেয়নি সফরকারীরা। তাদের বিবর্ণ বোলিংয়ের সুযোগ নিয়েই এনক্রুমা বোনার, জশুয়া ডি সিলভা ও আলজারি জোসেফ দারুণ খেলে ক্যারিবীয়দের এনে দেন চারশ-ঊর্ধ্ব রান। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্তকে হারিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হক। কিন্তু সেটা ঠিকঠাক পারেননি তারা। উল্টো বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে দলের বিপদ বাড়িয়ে ফেরেন দুজনই। তবে দিনের শেষভাগে মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন দেখেশুনে খেলে নিরাপদে ফেরেন। এখন তাদের ব্যাটে ভর করে ফলোঅন এড়ানোর আশা করছে রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যদের।

গতকাল ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দ্বিতীয় সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে অলআউট ৪০৯ রানে। বোনার ফেরেন ৯০ রানে। জশুয়া ডি সিলভার ব্যাট থেকে আসে ৯২ রান। এদিকে আলজারি জোসেফ করেন ৮২ রান। প্রথম দিনে দুটি করে উইকেট শিকারি আবু জায়েদ চৌধুরী ও তাইজুল ইসলাম ভাগাভাগি করে নেন শেষ চার উইকেট। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ গতকাল দিন শেষ করেছে ৪ উইকেটে ১০৫ রানে। অপরাজিত রয়েছেন মুশফিকুর রহিম ২৭ ও মোহাম্মদ মিথুন ৬ রানে।

যে উইকেটে গতকাল অনায়াসে রান তুলেছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা, জবাব দিতে নেমে সেখানেই ছন্নছাড়া ব্যাটিং প্রদর্শনী করেছে বাংলাদেশ। এ কারণে এখনও সফরকারীদের প্রথম ইনিংসের চেয়ে স্বাগতিকরা পেছনে রয়েছে ৩০৪ রান।

ঢাকা টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের প্রাথমিক লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ৪০৯ রান টপকে যাওয়া। কিন্তু গতকাল ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই স্বাগতিকরা হারায় সৌম্য সরকারকে। প্রথম ওভারের শেষ বলে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাট তুলে দেন তিনি। নামের পাশে তখনও শূন্য সৌম্যর। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই নাজমুল হোসেন শান্ত সাজঘরের পথ ধরেন। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে পা না নিয়ে ব্যাট চালিয়ে বিপদে পড়েন তিনি। বল গালিতে গিয়ে ধরা পড়ে এনক্রুমা বোনারের কাছে। তাদের দুজনকেই তুলে নেন শেনন গ্যাব্রিয়েল। এরপর দারুণ ব্যাটিংয়ের আভাস দেন তামিম ইকবাল ও মুমিনুল। দুজন খেলেন দারুণ দারুণ শট। ৭৮ বলে তাদের তৃতীয় উইকেট জুটিও স্কোর বোর্ডে যোগ করে ৫৮ রান। এর পরই ৩৯ বলে চারটি চারে ২১ রান করে রাকিম কর্নওয়ালের বলে জশুয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ দেন মুমিনুল। সঙ্গী হারিয়ে খুব বেশিক্ষণ টেকেননি তামিম। ৫ বল পরই বিদায় নেন তিনি। আলজারি জোসেফের সাদামাটা মিডেল স্টাম্প বরাবর বল চার হাঁকাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় বল চলে যায় মিড উইকেটে দাঁড়ানো মোসলের হাতে। ফেরার আগে তামিম করেন ৬ চার ও ১ ছয়ে ৪৪ রান।

দ্রুত দুই হারিয়ে বড় বিপদে পড়া বাংলাদেশকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন। গতকাল তারা পঞ্চম উইকেটে প্রায় ১৮ ওভার ব্যাট করেন। এ সময়ের মধ্যে তারা ৩৪ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছন্ন রয়েছে, যে কারণে বাংলাদেশ আপাতত ফলোঅনের লজ্জা এড়ানোর স্বপ্ন দেখতে পারছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে গতকাল ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। এদিকে আলজারি জোসেফ ও রাকিম কর্নওয়াল একটি করে উইকেট নেন যথাক্রমে ৩৪ ও ১৮ রান দিয়ে।

এর আগে আগের দিনের ৫ উইকেটে ২২৩ রান নিয়ে গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোনার ও ডি সিলভা ২২ গজে নামেন। তারা বেশ স্বচ্ছন্দেই খেলছিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে তারা যোগও করেছিলেন ৮৮ রান। শেষ পর্যন্ত এ জুটি বাংলাদেশ ভাঙতে পারে মিরাজের কল্যাণে। বোনারকে (৯০) মিথুনের ক্যাচে পরিণত করে ফেরান তিনি। তার পরও স্বাগতিকদের বিপদ কাটেনি। সপ্তম উইকেটে দারুণ ১১৮ রানের জুটি গড়ে ক্যারিবীয়দের এগিয়ে দেন ডি সিলভা ও আলজারি জোসেফ। এরই মধ্যে সেঞ্চুরি আশা জাগিয়েছিলেন সিলভা। কিন্তু ব্যক্তিগত ৯২ রানের মাথায় তাইজুল তাকে বোকা বানিয়ে করেন বোল্ড। অন্যপ্রান্তে অবশ্য জোসেফ খেলছিলেন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের মতোই। কিন্তু তিনিও আর বেশি দূর যেতে পারেননি। আউট হয়ে যান ৮২ রানে। এরপর দ্রুতই সফরকারীদের ৪০৯ রানে থামিয়ে দেয় টিম টাইগার্স।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ৪০৯/১০ (১৪২.২; ক্যাম্পবেল ৩৬, ব্রাথওয়েট ৬৭, মোজলি ৭, বোনার ৯০*, মায়ার্স ৫*, ব্ল্যাকউড ২৮, জশুয়া ৯২, জোসেফ ৮২, কর্নওয়াল ৪*, ওয়ারিকান ২ ও গ্যাব্রিয়েল ৮; রাহি ৪/৯৮, মিরাজ ১/৭৫, নাঈম ০/৭৪, তাইজুল ৪/১০৮ ও সৌম্য ১/৪৮)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১০৫/৪ (তামিম ৪৪, মুমিনুল ২১, মুশফিক ২৭*, মিথুন ৪*; গ্যাব্রিয়েল ২/৩১, কর্নওয়াল ১/১৮, জোসেফ ১/৩৪)

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০