নিজস্ব প্রতিবেদক: মো. আশরাফুল ইসলাম। বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ২২ তম ব্যাচের একজন প্রতিভাবান কর্মকর্তা। অতিরিক্ত কমিশনার মো. আশরাফুল ইসলাম ২০১৮ সালে অকালে প্রয়াত হন। মেধাবী, সৎ, বিনয়ী ও দক্ষ এ কর্মকর্তাকে স্মরণী করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। এ কমিশনারেটের আওতাধীন আগ্রাবাদ বিভাগের একটি সম্মেলন কক্ষ মো. আশরাফুল ইসলামের নামে উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১০ মার্চ) প্রয়াত এ কর্মকর্তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে কক্ষের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন।
চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আগ্রাবাদ বিভাগ, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী দপ্তর। বৃটিশ আমলে নির্মিত এ দপ্তরে কোন সম্মেলন কক্ষ না থাকায় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সভা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সহজে আয়োজন করা সম্ভব হতো না। কমিশনারের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে এ বিভাগে একটি আধুনিক সম্মেলন কক্ষ নির্মাণ করা হয়। বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ) ২২তম ব্যাচের চৌকস কর্মকর্তা প্রয়াত অতিরিক্ত কমিশনার মো. আশরাফুল ইসলাম এর নামে এ সম্মেলন কক্ষের নামকরণ করা হয়। সকাল ১০টায় কমিশনার এর উদ্বোধন করেন।
এ সময় চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, যুগ্ম কমিশনার মুশফিকুর রহমান, সেলিম শেখ ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এর পরিচালক অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপনসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রয়াত মো. আশরাফুল ইসলাম এর সহধর্মিনী আইসিডিডিআর’বি এর সহকারী সাইন্টিস্ট ডা: সাবিহা নাসরিন, পুত্র আজমাইন শারার উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রয়াত মো. আশরাফুল ইসলাম এর সহকর্মীরা স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
অনুষ্ঠানে কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন প্রয়াত এ কর্মকর্তার কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, মো আশরাফুল ইসলাম এর আর্দশে যাতে তরুণ কর্মকর্তারা অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে পারে। এজন্য তার নামে এ সম্মেলন কক্ষের নামকরণ করা হয়েছে। প্রয়াত এ কর্মকর্তা তার কর্মের মধ্য দিয়ে আমাদের মনি কোঠায় চিরদিন বেঁচে থাকবেন।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, মো. আশরাফুল ইসলাম ১৯৭৬ সালে পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার মসজিদপাড়া নামক এলাকায় একটি অভিজাত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্মানসহ বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০০৩ সালে বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ২২তম ব্যাচের একজন প্রতিভাবান সদস্য হিসেবে যোগদান করেন।
আরো বলা হয়, ২০১৩ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘স্ট্রেঞ্জথেনিং দি ক্যাপাসিটি অব গর্ভমেন্ট অফিসিয়ালস’ স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বেডফোর্ডশায়ার থেকে এমএসসি ইন বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রী লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত মেধাবী, সৎ, বিনয়ী ও দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি), চট্টগ্রাম ও ঢাকা কাস্টম হাউস ও ভ্যাট বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। কাস্টমস বিভাগে অবদানের জন্য ২০১১ সালে তাকে ‘ডব্লিউসিও সার্টিফিকেট অব মেরিট’ প্রদান করা হয়। সর্বশেষ প্রেষণে দুর্নীতি দমন কমিশনে (পরিচালক) পদে নিয়োগ পান তিনি। প্রেষণে থাকাবস্থায় ২০১৮ সালের ১৫ আগস্ট তিনি অকাল প্রয়াত হন।
