মার্চে ১৬ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স সংগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ সংকটের মধ্যেও গত মার্চে বেড়েছে বাংলাদেশের প্রবাসী আয়। স্বাধীনতার মাসে মোট ১৯১ কোটি ৬৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। টাকায় যার পরিমাণ ১৬ হাজার ২৯১ কোটি টাকা (১ ডলার = ৮৫ টাকা)। হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৪ কোটি ডলার বেশি বা ৩৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। গত বছর মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ১২৭ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, হিসাব করে দেখা গেছে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মোট ৫৬৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগের বছর বা ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যার পরিমাণ ছিল ৪৩৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের নগদ প্রণোদনা ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী মহামারিতে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার কারণে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে সংকটের মধ্যেও দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। তবে প্রবাসী আয়ের এ ইতিবাচক ধারা ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

প্রসঙ্গত, প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ (রেমিট্যান্স) প্রবাহের ক্ষেত্রে ২০২০ সালে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম হবে বলে বলে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর সদর দপ্তর থেকে ‘কভিড-১৯ ক্রাইসিস থ্রো মাইগ্রেশন লেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৬০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা)। রেমিট্যান্সের প্রবাহ চাঙ্গা থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সবশেষ ১৬ মার্চ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৩.০৯ বিলিয়ন বা চার হাজার ৩০৯ কোটি ডলারে বেশি রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মার্চে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৪ কোটি ১৩ লাখ ডলার। ১৪৩ কোটি ১৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে এক কোটি লাখ মার্কিন ডলার। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে একটিতে এসেছে তিন কোটি ২৯ লাখ ডলার।

সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। তারও আগে অর্থাৎ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই সময় রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক তিন শতাংশ বেশি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০