নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজান উপলক্ষে দ্রব্যমূল্য সহনশীল রাখার জন্য আমদানি করা অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের ওপর ৪ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সই করা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের অংশ হিসেবে এনবিআর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করা যায় এনবিআরের নতুন সিদ্ধান্তে বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমবে।’
রোজার মৌসুমে ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। নিম্ন আয়ের পাশাপাশি মধ্যবিত্তের বাজারে হিসাবে টান লাগে। তাই সরকার আমদানি পর্যায়ে যাতে খরচ কমে যায়, সে জন্য অগ্রিম কর কমাল।

এর আগে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রস্তাবনাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল আমদানিতে আরোপিত কর ও ভ্যাট যৌক্তিক হারে নির্ধারণের জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অভিন্ন মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতি লিটার ভোজ্য তেলের মূল্যের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করার ঘোষণা দেন।
ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন (খোলা) মিল গেটে ১০৭ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১১০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন মিলগেট মূল্য ১২৩ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১২৭ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা। পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন মিলগেট মূল্য ৫৮৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৬০০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ৬২৫ টাকা।
চলতি বছরের শুরু থেকে অস্থির হয়ে পড়ে ভোজ্যতেলের বাজার। দফায় দফায় বাড়তে থাকে দাম। ফেব্রুয়ারি মাসে দাম বেড়ে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসে। অপরিশোধিত তেল আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৪ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয় ব্যবসায়ীদের। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়লে ওই দামের ওপর ভিত্তি করে ভ্যাট ও কর আদায় করলে স্থানীয় বাজারেও দাম বাড়ে। আর এ পরিপ্রেক্ষিতেই এই অগ্রিম কর প্রত্যাহার করা হলো।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার অস্থিতিশীল থাকায় দেশের পরিশোধনকারী মিল ও ভোক্তাস্বার্থ বিবেচনায় ভোজ্য তেলের মূল্য সীমা নির্ধারণ করে দেয় সরকার।