খালেদা জিয়া করোনা আক্রান্ত হলেও অবস্থা স্থিতিশীল: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে বিএনপি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করোনাভাইরাস পজিটিভ জানানোর পর তা নিয়ে বিএনপি ছিল নিশ্চুপ।

পরে বিকালে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি দলীয় প্রধানের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভালো আছেন, তার অবস্থা স্থিতিশীল।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) আইসিডিডিআর,বিতে তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আমরা আজকে যেটা পেয়েছি, সেই টেস্ট রিপোর্টটা পজিটিভ। অর্থাৎ তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।’

সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রফেসর ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক যারা আছেন, তাদের তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। তিনি এখন স্টেবল আছেন, ভালো আছেন।’

খালেদা জিয়ার অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘তার কোনো টেম্পারেচার নেই, অন্য কোনো উপসর্গও তার নেই। তার চিকিৎসা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আমরা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক যারা আছেন তারা দেশের অত্যন্ত বরেণ্য চিকিৎসক, তাদের তত্ত্বাবধায়নে আছেন এবং তিনি ভালো আছেন।’

তিনি জানান, তার চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। অর্থাৎ যদি কোনো প্রয়োজন হয়, তখন সেভাবেই ফারদার ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাচ্ছি যে, এই ব্যাধি এখন যেভাবে সারাদেশে একটা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসীকে আমরা আহবান জানাব, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াও আহ্বান জানিয়েছেন যে, তার জন্য, তার মুক্তির জন্য সবাই যেন দোয়া করেন। বিশেষ করে আমাদের দলের সব স্তরের নেতাকর্মীদের আহ্বান থাকবে যে, তারা দেশনেত্রীর রোগমুক্তির জন্য পরম করুণাময় আল্লাহতালার কাছে দোয়া চাইবেন এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে তারা যেন দোয়া করেন। আমাদের অনুরোধ থাকবে, স্থানীয় মসজিদে তার জন্য দোয়া করবেন।’

খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকা গৃহকর্মী ফাতেমাসহ অন্যদের সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওখানে যারা আছেন তাদের সম্পর্কে আমি বলতে পারব না। আমরা শুধু তারটাই জেনেছি। যেটা আমি সুনিশ্চিতভাবে বলেছি।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাগ্নে ডা. মামুন টেস্ট করা হয়নি বলে এর আগে যে তথ্য দিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি হয়তো জানতেন না। এই বিষয়ে আমি বলতে পারব না। এটা তার কাছে জানতে চান। আমার যেটা দায়িত্ব আপনাদের জানানোর সেটা আমি জানিয়েছি।’

খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানে নিজের বাসা ‘ফিরোজায়’ আছেন। এর আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আল মামুন দাবি করেছিলেন, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়ার নমুনাই নেয়া হয়নি।

শনিবার বিকালে ডা. মামুন বেসরকারি হাসপাতালের একজন টেকনোলজিস্ট নিয়ে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসায় গেলে খবর ছড়িয়েছিল যে, তিনি পরীক্ষা করাচ্ছেন। তবে পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেননি খালেদা। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলেন মামুন।

রোববার নমুনা পরীক্ষার একটি প্রতিবেদন আসে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘করোনাভাইরাস পজিটিভ’ ওই প্রতিবেদন খালেদা জিয়ার বলে লেখা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০