প্রথম প্রান্তিক

৩৪ কোটি টাকা মুনাফা করল রবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোট আয়ের ওপর দুই শতাংশ ন্যূনতম করের নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও ৩৪ দশমিক তিন কোটি টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) নিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষ করল দেশের বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা।

নতুন ১০ লাখ গ্রাহক যোগ হয়ে বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির সক্রিয় গ্রাহক পাঁচ কোটি ১৯ লাখে। মোট গ্রাহকের ৭০ দশমিক ছয় শতাংশ ইন্টারনেট গ্রাহক নিয়ে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে রবি। গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত একটি ডিজিটাল প্রেস কনফারেন্সে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের ফল ঘোষণার সময় এসব তথ্য জানিয়েছে অপারেটরটি।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির আয়ের পরিমাণ এক হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, যা ২০২০ সালের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় তিন দশমিক দুই শতাংশ বেশি ও গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় এক দশমিক সাত শতাংশ বেশি। ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ভয়েস সেবা থেকে রবির রাজস্বের হার চার দশমিক দুই শতাংশ কমেছে, যা ভয়েস কল করার ক্ষেত্রে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর আগ্রাসী ভূমিকার প্রতিফলন। অন্যদিকে ডেটা সেবায় রাজস্ব গত প্রান্তিকের তুলনায় আট দশমিক পাঁচ শতাংশ ও গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১৬ দশমিক তিন শতাংশ বেড়েছে।

গত প্রান্তিকের তুলনায় ছয় দশমিক চার শতাংশ বেড়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের শেষ নাগাদ রবির ইবিআইটিডিএ দাঁড়িয়েছে ৮১১ দশমিক সাত কোটি টাকা। ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় ইবিআইটিডিএ বেড়েছে তিন দশমিক এক শতাংশ। এছাড়া গত প্রান্তিকের তুলনায় রবির ইবিটডিএ মার্জিন এক দশমিক দুই পার্সেন্টেজ পয়েন্ট (পিপি) ও ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ পিপি বেড়েছে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে এক হাজার ১১৫ কোটি টাকা, যা এ প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৫৬ দশমিক তিন শতাংশ। কোম্পানিটি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে মূলধনি বিনিয়োগ করেছে ১৫০ দশমিক ছয় কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত রবির নেটওয়ার্কের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৫০২টিতে, যার শতভাগই ফোরজি সাইট।

রবির পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ওপর তিন শতাংশ হারে অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশের প্রস্তাব দিয়েছে (প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারে ৩০ পয়সা)। গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রবির ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হবে।

কোম্পানির আর্থিক ফল সম্পর্কে রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে বছরের শুরু থেকে আমাদের আর্থিক অগ্রগতির হার আশাব্যঞ্জক। এ ইতিবাচক অগ্রগতির ফলে একটি অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পেরে আমরা গর্বিত। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমাদের পিএটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক তিন কোটি টাকা। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, মূল আয়ের ওপর দুই শতাংশ ন্যূনতম করের প্রভাবে মুনাফা প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি। শুধু তা-ই নয়, এই করের প্রভাবে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর জন্য করপোরেট করে (৪০ শতাংশ) যে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে সে সুবিধা থেকেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে, আমাদের সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা পুঁজিবাজারে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার পরও তারা কাক্সিক্ষত প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা আবারও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব যাতে আমাদের ব্যবসাকে এই অন্যায্য কর থেকে মুক্ত করা হয়।

৪.৫জি সেবায় রবির অসাধারণ সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের প্রথম অপারেটর হিসেবে সব নেটওয়ার্ক সাইটগুলোয় ৪.৫জি প্রযুক্তি স্থাপন করতে পেরে আমরা গর্বিত। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নিলামে আরও তরঙ্গ নেয়ার মাধ্যমে মোট নেটওয়ার্ক সাইট ও গ্রাহক প্রতি তরঙ্গের হারের ভিত্তিতে এখন আরও স্থিতিশীল ও উচ্চগতির মোবাইল ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রস্তুত রবি। আমাদের মোট গ্রাহকের ৭০ দশমিক ছয় শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হওয়ায় আমরা বিশ্বাস করি পরবর্তী প্রজšে§র ডিজিটাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে আমরা সঠিকপথেই এগুচ্ছি।

বাজার ব্যবস্থায় নানা প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে মাহতাব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ডিডব্লিওডিএম (ডেনস ওয়েভলেঙ্গথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং) সরঞ্জামগুলোর ব্যাপারে অনুমোদন না পাওয়ার কারণে আমরা এখনও হাজার হাজার কিলোমিটার ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারছি না, যা আমাদের সেবার মান আরও উন্নত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসএমপি বিধিমালার কার্যকর প্রয়োগের অভাবে টেলিযোগাযোগ বাজারে একটি অসম প্রতিযোগিতা বিরাজ করছে। এর ফলে বাজারে অদূর ভবিষ্যতে গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০