নিজস্ব প্রতিবেদক: যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমাদের দেশের অবস্থাও পার্শ্ববর্তী ভারতের মতো হয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ বুলেটিনে এ কথা জানান অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। দেশে বর্তমানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার নি¤œমুখী। তবে মৃত্যুর হার এখনও এক দশমিক ৪৮ শতাংশ।
রোবেদ আমিন বলেন, আমাদের অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে হবে। আর যদি সেটা না হয়, তাহলে কিন্তু আমাদের চিত্র আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের মতো হয়ে যেতে পারে। আমরা যদি ডাবল বা ট্রিপল মিউটেশনের মধ্যে পড়ে যাই, তাহলে আমাদের অবস্থা কতটা ভয়ংকর হবে, সেটা চিন্তা করার জন্যও সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বর্তমানে করোনাভাইরাসের অসম্ভব ঊর্ধ্বগতি চলছে। হাজার হাজার মানুষ সেখানে মারা যাচ্ছেন। সেখানে যে দুটো ভেরিয়েন্ট পাওয়া গেছে সেগুলো পুরো পৃথিবীর বিস্ময়। এটিকে বলা হচ্ছে ডাবল বা ট্রিপল মিউটেশন ভাইরাস। আমরা আবারও সবাইকে বলতে চাই, কোনোক্রমেই যেন এই ডাবল বা ট্রিপল মিউটেশন আমাদের দেশে এসে না পৌঁছায়।
বুলেটিনে তিনি বলেন, কোনো মানুষকে কোয়ারেন্টাইন করতে হলে সেটা হতে হবে ১৪ দিন। ১৪ দিনের নিচে কোয়ারেন্টাইন সম্ভব নয়। কিন্তু শুধু কোয়ারেন্টাইন পালন করানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একমাত্র অধিদপ্তর নয়, এখানে আরও অনেক অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, যদি আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে বিষয়টিকে দেখতে চাই, তাহলে আমাদের উচিত হবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন যেন নিশ্চিত হয়। আর এটা যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে হয়, তাহলে সবচেয়ে ভালো। সেটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক বা হোম কোয়ারেন্টাইন যেন সবাই কঠোরভাবে পালন করা হয়, সে বিষয়ে সবাইকে আহ্বান জানানো যাচ্ছে। কারণ পাশের দেশ ভারতে বেঙ্গল ভেরিয়েন্ট চলে এসেছে। এটি অত্যন্ত মারাত্মক এবং চারিদিকে সংক্রমণ করার ক্ষেত্রে ৩০০ গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন।
বাংলাদেশ এখন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ পার করছে বলে জানিয়ে রোবেদ আমিন বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউন আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলছে। কিন্তু আজ (গতকাল) সীমিত পরিসরে শপিং মল এবং দোকানপাট খুলে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন কোনো পরিপূর্ণ সমাধান নয়। একইসঙ্গে এতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই জনগণকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে মাঠপর্যায়ে যারা স্বাস্থ্যবিধি মানানোর দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের কঠোর হয়ে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর প্রয়োজন হতে পারে।