বাজেটে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে বরাদ্দের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে বরাদ্দ দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি দ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ারও দাবি জানায়।

এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের মহাসচিব আব্দুল খালেক। এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. সাইদুল হাসান সেলিম।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমাদের চেয়ে দরিদ্র দেশগুলো আয়ের সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে তাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর বয়সেও শিক্ষায় জিডিপির ২.২ শতাংশ বাংলাদেশে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। যা জাতির জন্য দুঃখজনক।

করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়েছে তাই নয় শিক্ষকরাও মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বর্তমান সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত ও শিক্ষা সম্প্রসারণে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে উল্লেখ করে আরও বলা হয়, অথচ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন মানোন্নয়নে যথার্থ নজর দেওয়া হয়নি। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়, যা বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে খুবই বেমানান ও লজ্জাকর। অথচ দেশের ৯৭ শতাংশ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার গুরুদায়িত্ব পালন করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা। এ জন্য তারা আসন্ন বাজেটে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন মানোন্নয়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে বরাদ্দের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি সাইদুল হাসান সেলিম বলেন, “আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকদের স্বীকৃত একটি শিক্ষা আইন নেই। দীর্ঘ ১৪ মাস বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্তু এখন সবকিছু খোলা। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষার মান সবচেয়ে খারাপ। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাই আমরা অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে আমরা প্রতিবন্ধী জাতিতে পরিণত হবো। আমাদের কোনো উন্নয়ন তখন কাজে আসবে না। তাই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।”

এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে ৯টি দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো-

১. ইউনেসকোর সনদ অনুয়ায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের লক্ষ্যে ২০২১-২২ অর্থ বছরে বাজেট বরাদ্দ রাখার জোর দাবি

২. এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ বাড়িভাড়া, উৎসব ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা প্রদানে বাজেটে বরাদ্দের ব্যবস্থা

৩. শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ জিডিপির ৬ শতাংশ ও জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ প্রদান

৪. এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে ৫ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ ঘোষণা

৫. প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অবশিষ্ট নন-এমপিও প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান

৬. ২০১৫ সালের পূর্বের নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি ও বেসরকারি প্রধান শিক্ষকদের একই বেতনস্কেল নির্ধারণ করতে হবে। একইভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষকদের আলাদা বেতন নির্ধারণ করতে হবে

৭. অবিলম্বে শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন ও শিক্ষক সুরক্ষা আইন রেখে অনুমোদিত শিক্ষা আইন প্রকাশ

৮. শিক্ষা বাজেট বরাদ্দ থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য খাতের সংশ্লিষ্টতা বাদ দিতে হবে

৯. শিক্ষাখাতের বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ ২৮টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যয় করা হয়। শিক্ষাখাতের বরাদ্দ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই ব্যয় করতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০