৪৩ টাকা ভ্যাট দিয়ে নাসির জিতলেন ১০ হাজার টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফটিকছড়ির মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। চট্টগ্রামে কাজে রাতে থেকে যান একটি হোটেলে। ভ্যাট ৪৩ টাকাসহ ভাড়া দেন ৫০০ টাকা। সচেতন নাগরিক হিসেবে হোটেল থেকে বুঝে নেন ইএফডিএমএস চালান। মাত্র ৪৩ টাকা ভ্যাট দিয়েই লটারিতে জিতে যান ১০ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন ভ্যাটদাতা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের হাতে পুরস্কারের চেক তুলে দেন।

সোমবার (১৪ জুন) চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের সম্মেলন কক্ষ সৈকতে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কারের চেক তুলে দেওয়া হয়। এসময় যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ সেলিম শেখ, মো. মুসফিকুর রহমান, ডেপুটি কমিশনার মো. শাহীনুর কবীর পাভেল, মো. আহসান উল্লাহ, সহকারী কমিশনার অনুরূপা দেব, হোটেল গোল্ডেন ইন লিমিটেড এর ব্যবস্থাপক (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) আলী আসগর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পুরস্কার বিজয়ী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন শেয়ার বিজকে বলেন, আমার বাড়ি ফটিকছড়ির নাজিরহাট এলাকায়। বিভিন্ন কাজে চট্টগ্রাম শহরে আসতে হয়। ২৯ মে পারিবারিক কাজে চট্টগ্রাম শহরে আসি। শহরে কোন আত্মীয়-স্বজন নেই। অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় আগ্রাবাদ স্টেশন এলাকার হোটেল গোল্ডেন ইন লিমিটেড রাত্রি যাপন করি। এক রাতে ভ্যাট ৪৩ টাকাসহ ৫০০ টাকা ভাড়া দেয়। ভাড়া দেওয়ার পর ভ্যাটের চালান (ইএফডিএমএস চালান) বুঝে নেয়, আর যত্ন করে রেখে দেয়।

তিনি বলেন, মে মাসের ইএফডিএমএস চালানের উপর লটারির ফল প্রকাশিত হয়। আমি আমার কূপন নাম্বারের সঙ্গে বিজয়ীদের নম্বর মিলিয়ে দেখি। যাতে চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা জিতে নেয়। আমি অনেক দিন বিদেশে ছিলাম। সেখানে ভ্যাট চালান নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা ছিল। ফলে হোটেলে ভ্যাট নেওয়ার পরও চালান নিয়েছি। সবাই ভ্যাট দেওয়ার পর চালান বুঝে নিলে আমার মতো পুরস্কার জিততে পারবেন।

চট্টগ্রাম ভ্যাট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৫ মে ৫ম বারের মতো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) ইএফডিএমএস থেকে ইস্যু করা ইনভয়েসের উপর লটারি অনুষ্ঠিত হয়। এতে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন ১৬ জন ভ্যাটদাতা চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে জিতেছেন। যার মধ্যে আগ্রাবাদ বিভাগের আওতাধীন হোটেল গোল্ডেন ইন লিমিটেড থেকে ভ্যাট চালান নিয়ে মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা জিতেছেন।

কর্মকর্তারা জানান, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন হোটেল গোল্ডেন ইন লিমিটেডে স্থাপিত ইএফডিএমএস হতে ইস্যু করা ইনভয়েসের কপিসহ পুরস্কারের জন্য আবেদন করেন। নীতিমালা অনুযায়ী বিজয়ীর ইনভয়েস নম্বর, চালানের কপি ও আইডি যাচাই করে তাৎক্ষনিকভাবে পুরস্কারের চেক হস্তান্তরের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন সবাইকে কেনাকাটার সময় চালান সংগ্রহ করে তা লটারির জন্য সংরক্ষণ করার অনুরোধ জানান।

সূত্রমতে, ভোক্তার ভ্যাট যাতে সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত হয়, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন দোকানে ইএফডি (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি কেনাকাটার পর মেশিন হতে চালান গ্রহণ হলে ক্রেতার পরিশোধিত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত হবে। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানে ৫২০টি মেশিন ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। আরো মেশিন স্থাপনের কাজ চলছে। প্রতিটি মেশিন এনবিআরের কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে অনলাইনে সংযুক্ত রয়েছে। ফলে ক্রেতার দেওয়া ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান নিশ্চিত হচ্ছে। আর ক্রেতাদের উৎসাহিত করতে প্রতি মাসের ৫ তারিখ এনবিআর ইএফডি চালানের উপর লটারির আয়োজন করা হয়। এই লটারিতে ১০১টি পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট ৫ম বারের মতো লটারিতে ৪র্থ পুরস্কার হিসেবে ১৬ জন ক্রেতা ১০ হাজার টাকা করে জিতেছেন।

###

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০