শরীফ ইকবাল রাসেল, নরসিংদী: গাছ আমাদের জীবন বাঁচায়। এ কথাটি যেমন সত্য, তেমনি এ গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অথচ আমরা প্রায় নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলি। সম্প্রতি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার শতাধিক তালগাছের উপরের অংশ কেটে ফেলেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের দৃষ্টিনন্দন সড়ক স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে ডাংগা ইউনিয়নের হাসানহাটা-তালতলা সড়কটি তৈরি করা হয়। পরবর্তী সময়ে এ সড়কটি দৃষ্টিনন্দন করতে দুই পাশে তালগাছ রোপণ করা হয়। এরই লক্ষ্যে সরকারি অর্থায়নে এই সড়কে তালগাছ রোপণ করে প্রশাসন। এভাবে কয়েক দিন যাওয়ার পর তালগাছগুলো পরিণত হলে এলাকার শোভা বর্ধনের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখছে। বজ্রপাত প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখছে গাছগুলো।
স্থানীয়রা জানান, এই তালগাছ থাকায় আশেপাশের এলাকার শত মানুষ এখানে সময় কাটাতে আসেন। পথচারী ও স্থানীয় কৃষকরা গাছের ছায়ায় বসে ক্লান্তি দূর করেন।
এখন গাছগুলোর পাতা কেটে ফেলায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এলাকায় আর অতিথিরা বেড়াতে আসেন না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাবের উল হাই জানান, সরকারিভাবে এ সড়কটিকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলার লক্ষ্যে তালবীজ রোপণ করা হয়। এখন পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কাউকে না জানিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো গাছগুলোর উপরের অংশ কেটে ফেলেছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্যও এই তালগাছগুলো না কাটার জন্য পল্লী বিদ্যুৎকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা কারও কথা রাখেননি।
এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আমীরুল ইসলাম জানান, পলাশ উপজেলায় সরকারিভাবে রেজুলেশনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গাছ কাটতে চাইলে উপজেলা প্রশাসনকে বাধ্যতামূলক জানাতে হবে। কিন্তু উপজেলার এ সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ যত্রতত্র গাছ কাটছে।
পল্লী বিদ্যুতের এভাবে গাছ কাটায় পলাশ উপজেলা বন বিভাগের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতের ঘোড়াশাল জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন জানান, সরকারি সিদ্ধান্তে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে গাছের উপরের অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। এটা অফিস বা ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত নয়।