গতকালের পর
জন্ডিস: হেপাটাইটিস এ ও হেপাটাইটিস ইÑএ দুটি ভাইরাস পানি বা খাবারবাহিত সংক্রমণ তৈরি করে। আর এ কারণে জন্ডিস হতে পারে। রোগীর চোখ ও শরীর হলুদ হয়ে যায়। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়ে যায়। তাছাড়া খাবারে অনীহা, বমি-বমি ভাব, পেটব্যথা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে। জন্ডিসের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। কেবল বিশ্রাম, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ আর সেবাযতœ প্রয়োজন। জন্ডিস হলে উল্টোপাল্টা ওষুধ, ভেষজ বা টোটকা খেলে আরও ক্ষতি হতে পারে। জন্ডিস এমনিতেই সেরে যায়, কিন্তু অনেক সময় জটিল আকার ধারণ করলে পেটে পানি আসার মতো জটিলতা, এমনকি রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে।
সতর্কতা অবলম্বন: একটু সচেতন হলেই আমরা বর্ষাকালে এই রোগগুলো থেকে মুক্ত থাকতে পারব। খাবার পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ ও জীবাণুমুক্ত হতে হবে। সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, পানি ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে একটি পরিষ্কার পাত্রে সংরক্ষণ করে পান করা। এ ছাড়া ফিটকিরি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে। ভালো মানের মিনারেল ওয়াটার পান বিকল্প হতে পারে। কখনোই পানের জন্য পুকুরের বা নদীর পানি ও ট্যাপের পানি সরাসরি ব্যবহার করা যাবে না। আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েলের পানি পান করা যাবে।
শুধু পানের ক্ষেত্রে নয়, খাবার তৈরি, পরিবেশন ও গ্রহণÑসব পর্যায়েই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যেন কোনো জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে না পারে। রান্নার তৈজস ভালো করে ধুয়ে নিন। কাঁচা শাকসবজি ও ফলমূল কখনোই না ধুয়ে খাবেন না। কোনোভাবেই বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। খাবার ভালোভাবে গরম করে খেতে হবে।
বাইরের বিশেষ করে খোলা খাবার কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। গরমে বাইরে বিক্রি হওয়া পানি, শরবত, জুস প্রভৃতি পান করবেন না।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার কোনো বিকল্প নেই। খাবার গ্রহণের আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। আর অসুস্থ হলে অবশ্যই নিকটবর্তী রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে বা নিকটবর্তী হাসপাতালে যেতে হবে, কখনোই নিজে নিজে চিকিৎসা করার চেষ্টা করবেন না।
ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন
সহযোগী অধ্যাপক, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা