গরুর মাংসের ভালো-মন্দ

গতকালের পর

বর্ধনশীল শিশু-কিশোরদের শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে গরুর মাংসের তুলনা নেই। শুধু শারীরিক বর্ধন নয়, বুদ্ধিবৃত্তিক গঠন এবং রক্তবর্ধনেও এটি ভূমিকা রাখে। ৮৫ গ্রাম গরুর মাংসে আছে ৯-১৩ বছর বয়সী শিশুর দৈনিক চাহিদার ১২৫ শতাংশ ভিটামিন বি১২, ৯০ শতাংশ প্রোটিন, ৭৪ শতাংশ জিংক, ৪২ শতাংশ সেলেনিয়াম, ৩২ শতাংশ ভিটামিন বি৬, ৩২ শতাংশ আয়রন, ২৯ শতাংশ নায়াসিন, ২৩ শতাংশ রিবোফ্লাভিন এবং ১৬ শতাংশ ফসফরাস।

ক্যান্সার প্রতিরোধক: গরুর মাংসে আছে ঈড়হলঁমধঃবফ খরহড়ষবরপ অপরফ (ঈখঅ), যা ক্যানসার-ডায়াবেটিস প্রতিরোধসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত; মেনে চললে নিয়মিত গরুর মাংস খেয়েও ঝুঁকিমুক্ত থাকা সম্ভব। খাওয়ার জন্য বেছে নিন গরুর রাউন্ড ও সেরলয়েন অঞ্চলের মাংস। মাংসের বাইরে যে চর্বি লেগে থাকে সেটা রান্নার আগে কেটে ফেলে দিলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা যায়। চেষ্টা করুন মাংসগুলো ছোট ছোট টুকরা করে কাটার। কেননা মাংসের টুকরা যত ছোট হবে ততই এর চর্বির পরিমাণ কমে যাবে। এ কারণে গরুর মাংস কিমা অথবা মাংস বাটায় চর্বি সবচেয়ে কম থাকে। মাংস কাটা শেষে সেটা ভালোভাবে ধুয়ে কিছুক্ষণ পানিতে সিদ্ধ করলে দেখা যাবে চর্বির স্তর উঠে আসছে। দৈনিক ৮৫ গ্রামের বেশি খাবেন না। বেশি তেল দিয়ে ভুনা করার চেয়ে বারবিকিউ, গ্রিল, কাবাব খেলে ক্ষতি এড়াতে সহায়তা হবে। মাংসে থাকা চর্বি আরও কমাতে ভিনেগার, লেবুর রস বা টকদই দিয়ে রান্না করতে পারেন। বেশি তেল, বেশি মসলা দিয়ে ভুনা মাংস রান্না করার চেয়ে ভালো হয় ঝোল ঝোল করে রান্না করলে এবং খাওয়ার সময় সেই ঝোল এড়িয়ে গেলে। মাংসের সঙ্গে বিভিন্ন সবজি, যেমনÑমিষ্টি কুমড়া, লাউ, পেঁপে ইত্যাদি মেশালে মাংস কম খাওয়া হয়। মাংস ফ্রিজে বা কিছুক্ষণ ঠাণ্ডা পরিবেশে রাখলে এর ওপর তেলের একটি আস্তর পড়ে। সেটা ফেলে দিয়েও ফ্যাট অনেকটা কমানো সম্ভব। অতিরিক্ত খাওয়ার ঝুঁকি: গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এ থেকে হƒদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি জটিলতা দেখা দিতে পারে। গরুর মাংসে যে কোলেস্টেরল থাকে সেটি বেশি বেড়ে গেলে হার্টের শিরায় জমে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দেয়। এতে হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত চলাচল করতে পারে না, অক্সিজেনের অভাব হয়। ফলে হƒদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়। গবেষণা বলছে, গরুর মাংস বেশি খেলে ক্যানসারের ঝুঁকিও বেশি থাকে। এ ছাড়া গরুর মাংস বেশি খেলে টাইপ-টু ডায়াবেটিস, মুটিয়ে যাওয়া, আর্থ্রাইটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, ত্বকের সমস্যা প্রভৃতি জটিলতা দেখা দিতে পারে। (শেষ)

সাজেদা কাশেম জ্যোতি

পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, বারডেম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০