বগুড়ায় সুলতানি ও মোগল স্থাপত্য নিদর্শনের সাক্ষী মসজিদ

পারভীন লুনা, বগুড়া: প্রায় ৫০ বছর আগে জঙ্গল ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। বাইরে থেকে শুধু একটি বটগাছই চোখে পড়ত। তবে প্রবীণ ব্যক্তিরা বলতেন, এই জঙ্গলের ভেতরে একটি মসজিদ রয়েছে। একপর্যায়ে ওই সময় প্রবীণদের বর্ণনা অনুযায়ী গ্রামবাসীরা জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করেন। এরপর দেখা মেলে একটি মসজিদের। তবে বটগাছের শিকড় দিয়ে ছেয়ে গেছে পুরো মসজিদ। এর মিনার দুটির একটি নষ্ট দেখা যায়।

বগুড়ার কাহালু উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোরতা গ্রামের গুন্নিপাড়ায় এ মসজিদটির অবস্থান। তিন গম্বুজ-বিশিষ্ট এ মসজিদটির প্রায় সাড়ে ৪০০ বছরের পুরোনো হবে বলে গ্রামবাসী ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সুলতানি ও মোগল আমলের স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয়ে নির্মিত মসজিদটির দেয়ালে এক ধরনের ছোট ইট দিয়ে গাঁথা। মসজিদটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪ ফুট ও প্রস্থ ১২ ফুট। পাঁচ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যর ও দুই ইঞ্চি প্রস্থের ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল মসজিদটি।

বর্তমানে এখানে নামাজ আদায় করার মতো অবস্থা নেই। তবে স্থানীয়রা পুরোনো এই মসজিদটিকে ঘিরে ঈদগাহ মাঠ বানিয়েছেন। এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন গ্রামবাসীরা। মসজিদটি দেখতে বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলা ও অন্য জেলা থেকে মানুষ আসছেন।

গোলাম রব্বানী নামে এক যুবকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি গাবতলী উপজেলার বাসিন্দা। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি এক নজর দেখার জন্য ছুটে এসেছেন তিনি। রব্বানী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি এ মসজিদের বিষয়ে জানতে পারেন। তাই দেখার জন্য তিনি বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন। বগুড়া পৌরসভার ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা বাবু প্রামাণিক। তিনি গোলাম রব্বানীর বন্ধু। এক সঙ্গে মসজিদটি নিজের চোখে দেখার জন্য এখানে এসেছেন।

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম ও ইমরান হোসেনসহ অন্তত ১০ জনের সঙ্গে। তারা বলেন, এই পুরোনো মসজিদটি একনজর দেখার জন্য বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার মানুষসহ অন্যান্য জেলার বাসিন্দারাও ছুটে আসেন। প্রবীণদের বর্ণনা অনুযায়ী এই মসজিদটির প্রায় সাড়ে ৪০০ বছরের পুরোনো হবে। তারা এই ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে এটি সংস্কার ও সংরক্ষণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে রাজশাহী-রংপুর বিভাগের প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে কাহালু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাছুদুর রহমান বলেন, ‘মসজিদটি প্রায় সাড়ে ৪০০ বছরের পুরোনো হবে। উপজেলা প্রকৌশলীকে মসজিদ সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে বলেছি। তিনি (প্রকৌশলী) সরেজমিন পরিদর্শন করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০