হাইকোর্টের রুলে স্থগিত হলো এলপিজি নিয়ে গণশুনানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্যাবের দায়ের করা রিট পিটিশনে হাইকোর্ট রুল জারি করায় এলপিজির বিষয়ে আগামী ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠেয় বিইআরসির গণশুনানি পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ‘তারা (বিইআরসি) যে দামের আদেশের ওপরে শুনানি করতে যাচ্ছে, সেটি ১২ এপ্রিলের দেয়া দামের বিষয়ে। এর মধ্যে আরও চারটি দাম সমন্বয়ের আদেশ দিয়েছে কমিশন। এ অবস্থায় আগের আদেশের কার্যকারিতা থাকে না। সেক্ষেত্রে এই শুনানি কীভাবে করে কমিশন। আর আগের আদেশে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল, সেগুলো এখনও বাস্তবায়ন করতে পারছে না।

এই বিষয়ে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘ক্যাব আবেদন করেছে যে, কমিশন ১২ এপ্রিলের আবেদন রিভিউ করতে চায়। এরপর তারা আরও চারটি আদেশ দিয়েছে। সবশেষ তারা ২৯ জুলাই আদেশ দেয়। বর্তমানে ২৯ জুলাইয়ের আদেশ অনুযায়ী দাম ঘোষণা করা আছে। সেখানে এখন ১২ এপ্রিলের আদেশ কোথা থেকে আসে। সেটা তো এখন আর নাই। ১২ এপ্রিলের আদেশের পর যে চারটি আদেশ দেয়া হয়েছে, সেখানে তো রিভিউ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ১২ এপ্রিলের আদেশ আবারও রিভিউয়ের কোনো সুযোগ তো নেই। এছাড়া আরও একটি মামলা আছে ক্যাবের, সেখানে ১২ এপ্রিলে কমিশন যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা কার্যকর করতে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘কমিশন শুধু একবার জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছিল। এর মধ্যে একজন জেলা প্রশাসক সেটি বাস্তবায়নে কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন। অথচ কমিশনের আইন অনুযায়ী, কমিশন দাম বাস্তবায়ন না করলে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। দাম বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা হাইকোর্টের কাছে আবেদন করেছিলাম। কভিডের কারণে সেটি পিছিয়ে গেছে। এখন সব যেহেতু খুলে দেয়া হয়েছে, দুই-এক দিনের মধ্যেই এ ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আমরা একটি আদেশ পাব বলে আশা করছি। আগের আদেশই বাস্তবায়ন হয়নি, সেজন্য বাণিজ্য সচিব, বিইআরসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রুল জারি হয়েছে।’

এদিকে বিইআরসি এক নোটিসে জানায়, ‘কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) দায়ের করা রিট পিটিশনের (নম্বর-৫৭৬৩/২০২১) পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। এই রুলের কারণে এলপিজির মূল্যহার সমন্বয়ের বিষয়ে ১৭ ও ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠেয় গণশুনানি পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হলো।’

এর আগে গত ৯ আগস্ট এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ১৭ আগস্ট রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশনের শহীদ একেএম শামসুল হক খান মেমোরিয়াল হলে শুরু হবে এ গণশুনানি। এক দিনে যদি আলোচনা শেষ করা না যায়, তাহলে আরও এক দিন অর্থাৎ ১৮ আগস্টও রাখা হয়েছিল শুনানির সুযোগ।

এর আগে গত ৭ জুলাই শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হলেও কভিডের সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় শুনানি স্থগিত করা হয়।

প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে গত ১২ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো এলপিজি নিয়ে গণশুনানি করে কমিশন। এরপর ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো

 আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয় বিইআরসি। এরপর প্রতি মাসেই আমদানি মূল্য বিবেচনায় নিয়ে এলপিজির দাম সমন্বয় করে আসছে বিইআরসি। কিন্তু বাজারে নির্ধারিত দামে গ্যাস পান না গ্রাহকরা। কারণ, এলপিজি ব্যবসায়ীরা শুরু থেকেই ঘোষিত মূল্যের বিরোধিতা করে আসছে। কমিশন মূলত ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এলপিজির মূল দাম নয়, এলপিজির মজুতকরণ, বোতলজাতকরণ, ডিলার ও খুচরা পর্যায়ে মাশুলেও পরিবর্তনের বিষয়ে শুনানি করতে যাচ্ছিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০