চুল পড়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রতিদিন একজন মানুষের গড়ে ১০০টির বেশি চুল পড়ে। তবে কভিড-আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার পর পোস্ট-কভিড সিনড্রোম হিসেবে অনেকের মাথার চুল পড়ে যাচ্ছে বেশি। এই চুল পড়ার মাত্রা অনেক বেশি হলে চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন। চুল পড়া রোধে মিনোক্সিডিল টপিক্যাল সলিউশন চুলের ফলিকলগুলো বৃদ্ধি করার মাধ্যমে চুল পড়া ঠেকাতে সাহায্য করে। করোনা-আক্রান্ত হয়ে যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে, তাদের ক্ষেত্রেই এই চিকিৎসা কার্যকর। এতে চুল লম্বা ও ঘন হয়। এ ছাড়া এই চিকিৎসা পদ্ধতি রক্ত চলাচল বাড়িয়ে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। মিনোক্সিডিল একটি ড্রপার বা মিক্স, যা চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ব্যবহার করতে হয়। মিনোক্সিডিল টাকের সমস্যার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়। ইদানীং কভিড সংক্রমণের কারণে চুল পড়া বা বয়সজনিত বা অন্য কোনো কারণে গোসলের সময়, বালিশে অথবা চিরুনিতে আগের চেয়ে বেশি চুল পড়তে পারে।
ব্যবহারবিধি
* মাথায় আক্রান্ত স্থানে ড্রপার দিয়ে এক মিলিলিটার করে অথবা আট থেকে ১০টি স্প্রে দিয়ে দিনে দুবার সলিউশনটি প্রয়োগ করা যায়।
* প্রতিদিন সকালে ও রাতে দুবার মাথার ত্বকের উপরিভাগে চুলের হারানো অংশে সলিউশনটি প্রয়োগ করুন।
* রাতে ঘুমানোর দুই থেকে চার ঘণ্টা আগে ব্যবহার করতে হবে। অবশ্যই এটা ব্যবহারের আগে ভালো করে চুল শুকিয়ে নিতে হবে।
* মিনোক্সিডিল টপিক্যাল সলিউশন ব্যবহার করার পর কোমল ও সাধারণ শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে। এমনকি চুল রংও করা যাবে।
মিনোক্সিডিল ব্যবহারের একটি লক্ষণীয় দিক হলো, রোগী নিজেই অনুধাবন করতে পারবেন যে এটা কাজ করছে কি না। সলিউশন ব্যবহারের দুই সপ্তাহের মধ্যে চুল পড়া কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। চার মাস ব্যবহারের পরই নতুন চুল গজাতে থাকবে। এটি ব্যবহারে তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে কেউ কেউ মাথার তালুতে আলতো চুলকানিজনিত অস্বস্তিবোধ করতে পারে। সলিউশনটি ১৮ বছরের কম বয়সী এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ব্যবহার করা উচিত নয়। চুল পড়া রোধে কার্যকর চিকিৎসা হচ্ছে, মিনোক্সিডিল টপিক্যাল সলিউশনের সঙ্গে পিআরপি (প্লাটিলেট-রিচ প্লাজমা) থেরাপি নেয়া। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে করতে হবে। আবার সব চিকিৎসা সবার জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে। কভিড-পরবর্তী চুল পড়লে বা অন্য কোনো কারণে হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া বেশি জরুরি।
ডা. জাহেদ পারভেজ
সহকারী অধ্যাপক, চর্ম যৌন রোগ বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
