পদ্মা ব্যাংক মার্জারের আবেদন বিবেচনা করবে সরকার: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার যে আবেদন পদ্মা ব্যাংক করেছে, সরকার তা বিবেচনা করে দেখবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো পদ্মা ব্যাংকে বিনিয়োগ করেছে।’

নানা কারণে আলোচিত পদ্মা ব্যাংক টাকার অভাবে পড়ে সরকারি কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার প্রস্তাব সরকারকে দিয়েছে, তা মন্ত্রণালয়ের হাত ঘুরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে রয়েছে।

সরকার কী ভাবছেÑএ প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক যেগুলো মার্জার করা দরকার, সেগুলো মার্জার হবে। সেটার আইন ড্রাফট হয়ে গেছে। আমরা এগুলোকে সংসদে নিয়ে আসব। সেখান থেকে অনুমোদিত হয়ে যাওয়ার পর মার্জার কার্যক্রম শুরু হবে।’

ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৭৭ ধারায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মার্জার বা একীভূত হওয়ার বিধান থাকলেও দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তাই বাধ্যতামূলক একীভূত করতে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পদ্মা ব্যাংকের আগে নাম ছিল ফারমার্স ব্যাংক। অনিয়ম আর ঋণ কেলেঙ্কারিতে ব্যাংকটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে তার মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন ঘটে ২০১৭ সালে।

পরের বছর ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, যিনি রেইস অ্যাসেট ম্যানেজেমেন্ট পিএলসি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডেরও চেয়ারম্যান। মালিকানায় পরিবর্তনের পর ব্যাংকের নামও পরিবর্তন হয়। সে সময় পদ্মা ব্যাংককে উদ্ধার করতে ৭১৫ কোটি টাকার মূলধন জোগায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি ব্যাংক, যা ব্যাংকটির মোট মূলধনের ৬৬ শতাংশ। কিন্তু টাকার অভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হিমশিম খাওয়া এ ব্যাংক এখন আবার সরকারের কাছে নতুন আবেদন করেছে।

পদ্মা ব্যাংকের আবেদনের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি এখনও পদ্মা ব্যাংকের মার্জার আবেদন হাতে পাইনি। (তবে) বিষয়টি আমাদের জানা আছে। সেটা হচ্ছে, পদ্মা ব্যাংকের মালিকানা কাঠামোতে আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সবগুলো জড়িত আছে। সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংকের শেয়ারই পদ্মা ব্যাংকে আছে এবং সেভাবেই ব্যাংকটি পরিচালিত হচ্ছে। পদ্মা ব্যাংকের বোর্ডে জনতা, সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক রয়েছে। সুতরাং তাদের প্রস্তাব অবশ্যই বিবেচনা করতে পারি। তার আগে আইনটি হতে হবে। আইন হওয়ার পর আমরা বিবেচনা করব।’

সরকারের টাকা নিয়েও দুরবস্থা কাটাতে না পারা পদ্মা ব্যাংককে উদ্ধারের চেষ্টা নিয়ে তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে যারা পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারা ব্যাংকটি চালাতে পারে নাই। অনেক দুর্নীতি হয়েছে সেখানে। কোথায় দুর্নীতি হয়েছে, সেটা এখনও আমরা জানতে পারি নাই। কারণ হলো প্রাইমারিলি আমাদের কাছে যে স্টেটমেন্ট ছিল এবং আমরা যেটুকু বুঝতে পেরেছি, সেই বোঝার ভিত্তিতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং তারা এখন জেলে আছে। এছাড়া সরকারের আর কী করার আছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন ওই ব্যাংকটিতে যারা শেয়ারহোল্ডার আছেন, যারা ঋণ গ্রহিতা বা ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছেন, তাদের সুরক্ষার বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে। সেজন্যই যাতে ব্যাংকটি বন্ধ না হয়ে যায়, এটাকে চলমান রাখা যায়, সেজন্যই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এগিয়ে এসেছে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০