এনায়েত করিম বিজয়, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের বিয়ে ঠেকাতে ঘটনাস্থলে হাজির হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় প্রতারণা করে ষষ্ঠ শ্রেণির মেয়েকে উপস্থিত না করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয় তালাকপ্রাপ্ত এক নারীকে। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা ও তালাকপ্রাপ্ত ওই নারীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুন।
গতকাল বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুন। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইল পৌরসভার কাগমারা এলাকায়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, কাগমারা এলাকার গাড়িচালক আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে ও ধরেরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়ার বিয়ে ঠিক হয়। এমন তথ্য পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রানুয়ারা খাতুন সাত্তারের বাড়িতে উপস্থিত হন। এ সময় প্রতারণা করে সাত্তারের এক আত্মীয় এনি আক্তারকে (তালাকপ্রাপ্ত) ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়। এতে এনি আক্তারের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তার বয়স দেখা যায় ২১ বছর। এনি দাবি করেন শুক্রবার তারই বিয়ে হচ্ছে। পরবর্তীকালে ম্যাজিস্ট্রেট তার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর বিয়ের আয়োজন শুরু করা হয়।
এরপর আবার খোঁজখবর নেন রানুয়ারা খাতুন। পরে গাড়িচালক সাত্তারের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়–য়া সাদিয়ার বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুনরায় সাত্তারের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন তিনি। এ সময় সরকারি নির্দেশ অমান্য করায় মেয়ের বাবাকে সাত দিন ও এনি আক্তারকে পাঁচ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সদর উপজেলার ধরেরবাড়ী মুসলিম হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় ওই ছাত্রীর বয়স সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিল। পরে বিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিস্টার অনুযায়ী ছাত্রীর তথ্য দেয়া হয়।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রানুয়ারা খাতুন বলেন, ‘ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে এমন তথ্য পেয়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়েছিলাম। প্রথমে তারা একজন তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে হাজির করে বলেন- তার বিয়ে হচ্ছে। পরে তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে চলে আসি। কিন্তু পরবর্তীকালে খবর পাই তারা প্রতারণা করেছে। পরে আবার বিয়ে বাড়িতে হাজির হই। তবে খবর পেয়ে বরপক্ষ বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়নি। পরে মেয়ের বাবা মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেবে না মর্মে মুচলেকা দেয়। বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় মেয়ের বাবাকে সাত দিন ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় তালাকপ্রাপ্ত ওই নারীকে পাঁচ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
