বাজারে আসতে শুরু করেছে চুয়াডাঙ্গার মাল্টা

মফিজ জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা: বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গায় গড়ে উঠেছে বারি জাতের অনেক মাল্টা বাগান। এসব বাগান পাকা-কাঁচা মাল্টায় ভরে গেছে। বাজারে মাল্টার ব্যাপক চাহিদা থাকায় ছোট-বড় অনেক বাগানে ফলটির চাষ করা হয়েছে।

মাল্টা চাষ ও বিপণন একটি লাভজনক ব্যবসা। চলতি বছর চুয়াডাঙ্গায় ১০ কোটি ৭২ লাখ টাকার বেশি মাল্টা বিক্রি হবে। ৯ বছর আগে প্রথম চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় ৪০ বিঘা জমিতে গড়ে ওঠে মাল্টা বাগান।

মাল্টা খেতে সুস্বাদু, মিষ্টি ও রসালো। বাজারে দেশীয় মাল্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মাল্টার উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হলে আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশে কমে আসবে কয়েক বছরের মধ্যে।

দামুড়হুদা উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামে প্রথম বাণিজ্যিকভিত্তিতে মাল্টা চাষ শুরু হয়। লাভজনক হওয়ায় তা পুরো জেলায় ছড়িয়ে পরে। ১২৭ হেক্টর জমিতে শতাধিক মাল্টা বাগান রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২৬, দামুড়হুদায় ৪৬, জীবননগরে ৫২ ও আলমডাঙ্গা উপজেলায় তিন হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। প্রতি বছর বাড়ছে পাচ্ছে মাল্টা চাষ। কারণ অন্য বাগান ও ফসলে লাভ কম হওয়ায় এ চাষে নতুন উদ্যোক্তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

চুয়াডাঙ্গায় প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ৯ মেট্রিক টন মাল্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

মাল্টার গায়ের রঙ সবুজ ও ভেতরের রঙ হালকা হলুদ। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মাল্টা খেতে সুস্বাদু, মিষ্টি ও রসালো। প্রতি বিঘায় মাল্টা বাগানে বছরে খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হয় এক লাখ টাকার বেশি। বাগানে কাজ করে অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। প্রতিদিন একজন শ্রমিক ৩০০ টাকা হাজিরা পান। শিক্ষিত বেকার যুবকরা মাল্টা বাগান দেখে চাষে আগ্রাহ দেখাচ্ছেন। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা দরে।

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থান থেকে মাল্টা নিয়ে ফলের আড়তে আসছেন বাগান মালিকরা। অনেকে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারীরা বাগান থেকে মাল্টা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

সদর উপজেলার বুজরুকগড়গড়ি গ্রামের মাল্টা বাগান মালিক সোহান আলী বলেন, বারি জাতের মাল্টা চাষ লাভজনক। এ চাষে খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় নতুন বাগান গড়ে উঠছে। স্টোরজাত ও সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে মাল্টা চাষ ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব।

জীবননগর উপজেলার মানিকপুর গ্রামের সজল আহমেদ বলেন, ২৫ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করেছি। বিক্রি শুরু হয়েছে। বাজারে চাহিদা ব্যাপক রয়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।

চুয়াডাঙ্গার বড়বাজার ফল ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গায় প্রচুর মাল্টা উৎপাদন হচ্ছে। বাগান মালিক ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নিয়মিত ফল নিয়ে আসছেন। এ মাল্টার চাহিদা রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, মাল্টার উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হলে আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশে কমে আসবে। তাই এ চাষ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া উচিত। মানুষ কম দামে মাল্টা কিনে খেতে পারবে। পুষ্টির চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০