শেয়ার বিজ ডেস্ক: সামরিক অভ্যুত্থানের পর জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের কারণে আটককৃত পাঁচ হাজার ৬৩৬ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে মিয়ানমার। চলতি মাসেই এসব বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে। গতকাল সোমবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। খবর: বিবিসি, রয়টার্স।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ওই ঘোষণায় বলা হয়, সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের কারণে আটক হওয়া এসব বন্দিকে মানবিক কারণে মুক্তি দেয়া হবে। এছাড়া দেশের অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির পেছনে সামরিক সরকারবিরোধী গ্রুপগুলোর দিকেও দোষারোপ করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার পৃথক এক প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছে, চলতি অক্টোবরের শেষের দিকে থাডিংয়্যুট উৎসব উপলক্ষে মোট পাঁচ হাজার ৬৩৬ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়ার একদিন পর এ ঘোষণা দিলেন তিনি।
সবাই শুধু আমাদের দোষারোপ করে: জান্তাপ্রধান: এদিকে মিয়ানমারের গত কয়েক মাস ধরে যে অস্থিরতা চলছে, তার জন্য দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারবিরোধীদের দায়ী করেছেন সরকারপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। গতকাল এক টেলিভিশন ভাষণে এ বিষয়ে আসিয়ানের সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।
সিভিল পোশাক পরিহিত জান্তা প্রধান এ দিন ভাষণে বলেন, ‘মিয়ানমারে বেশিরভাগ সংঘাত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উসকানির কারণে। সবাই শুধু আমাদের দোষারোপ করে, কিন্তু তারা যে উসকানি দেয়াসহ সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছে-সেসব কেউ দেখে না। আসিয়ানের উচিতÑএ ব্যাপারটিতে মনোযোগ দেয়া।’
এর আগে এক ভাষণে মিন অং হ্লেইং বলেছিলেন, সামরিক বাহিনী স্থায়ীভাবে মিয়ানমারে আসন গাড়বে না, বরং দেশটিতে সত্যিকার গণতন্ত্র আনাই সামরিক বাহিনীর উদ্দেশ্য।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। রক্তপাতহীন এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং। অং সান সুচি ও তার দল এনএলডির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বর্তমানে গৃহবন্দি বা কারাবন্দি।
পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তা সরকারের হাতে দেশটিতে কমপক্ষে ১১৬৭ জন নিহত হয়েছেন এবং সাত হাজার ২০০-র বেশি মানুষকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।