১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি ঝুঁকিতে পড়বে মোবাইল আমদানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংযোজন শিল্পে শুল্ক দশ শতাংশ ও সরবরাহকারী পর্যায়ে মূসক আরোপ করা হলে অবৈধভাবে মুঠোফোন আমদানি উৎসাহিত হবে। এর বিপরীতে সংযোজনকারী শিল্প প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পিছিয়ে পড়বে। তাই সংযোজন শিল্পে খুচরা যন্ত্রাংশের শুল্ক দশ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ)। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত বেস্ট ওয়েস্টার্ন লা ভিঞ্চি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধ জানিয়েছেন।

বর্তমানে মোবাইল ফোন আমদানিতে মোট শুল্ক দিতে হয় ২৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে শুল্ক পাঁচ শতাংশ, আমদানি পর্যায়ে মূসক ১০, সারচার্জ এক ও অগ্রিম আয়কর দুই শতাংশ। আগামী অর্থবছরের জন্য মোবাইল ফোন আমদানিতে মোট শুল্ক বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। যার মধ্যে শুল্ক ১০ শতাংশ, আমদানি পর্যায়ে মূসক ১৫ ও সরবরাহ পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ। এ ছাড়া সারচার্জ এক ও অগ্রিম আয়কর দুই শতাংশ।

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্সের প্রেসিডেন্ট মো. রহুল আলম আল মাহবুব বলেন, নবম বৃহৎ মুঠোফোন ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার স্থানীয়ভাবে মুঠোফোন উৎপাদন সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে স্বাগত জানাই। তবে এখন পর্যন্ত শতভাগ আমদানি নির্ভর হওয়ায় মুঠোফোনে শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা মনে করি, এর ফলে মুঠোফোন বাজারে চোরাচালান উৎসাহিত হবে, সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে এবং অসম প্রতিযোগিতার ফলে বৈধ আমদানিকারকরা ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবে না।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি স্থানীয়ভাবে মুঠোফোন উৎপাদন বা সংযোজন শিল্প প্রতিষ্ঠা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার বিধায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সিবিইউ আমদানির উপর শুল্ক বৃদ্ধি না করে বর্তমান শুল্ক পাঁচ শতাংশ বজায় রাখার জন্য এবং সরবরাহ পর্যায়ে এক বছরের জন্য মূসক অব্যাহতি (২০১৬-১৭ অর্থবছরের এসআরও নং ১৭৬-আইন/২০১৬/৭৫২-মূসক) বজায় রাখার জন্য।

ইডিশন টেকনোলজির চেয়ারম্যান মো. আমিনুর রশিদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের কোনো উৎপাদন বা সংযোজন শিল্প নেই। বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইগচওঅ)-এর অনেক সদস্য প্রতিষ্ঠান স্থানীয় মুঠোফোন শিল্প স্থাপনের জন্য আগ্রহী এবং আমাদের অনেক দিনের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার মুঠোফোন খুচরা যন্ত্রাংশের এইচএস কোড প্রণয়ন করেছেন। যেহেতু মুঠোফোন উৎপাদন একটি প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প এবং বাংলাদেশে এর দক্ষ শ্রমিকের অভাব আছে তাই দেশে সংযোজনকারী শিল্প ও দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলার জন্য ন্যূনতম এক বছর সময় প্রয়োজন।

ইউনিয়ন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুল কবির বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি ইন্টারনেট। বর্তমানে ১৩ কোটি মোবাইল গ্রাহকের মধ্যে ৭ কোটি ৫৬ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করছে। মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯৭ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট এর মাধ্যমে এ সেবা গ্রহণ করে। যেহেতু স্মার্টফোনের মাধ্যমে গ্রাহকরা কম্পিউটারের সব সুবিধা নেয় সেহেতু আমরা আশা করি, এ ব্যাপারে ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি ঝুঁকিতে পড়বে মোবাইল আমদানি সরকার কম্পিউটার পণ্যের সঙ্গে স্মার্টফোন ডিভাইসের শুল্ক সামঞ্জস্য করবেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে আরোপিত করের ফলে স্মার্টফোনের মূল্য ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে যাবে যা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করবে।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০