২৫ অক্টোবর সোমবার দৈনিক শেয়ার বিজ পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘সিঙ্গারের পুকুরচুরি’ শিরোনামে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়ে। এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রতিবেদনের বিষয়ে সিঙ্গারের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলো।
কোম্পানির পরিচালক (অর্থ) ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আকরাম উদ্দিন আহমেদ সই করা প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন করার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসৎ উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। এ ধরনের মনগড়া ও অপ-সংবাদ একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে।
প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড ১৯০৫ সাল থেকে এই উপমহাদেশের বর্তমান বাংলাদেশে অত্যন্ত পরিচ্ছন্নœভাবে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সরকারের রাজস্ব প্রদানে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড সদা সর্বদা সচেষ্ট। উল্লেখ্য যে, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড সর্বদা সঠিক নিয়মে আইনের নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারকে রাজস্ব প্রদান করে আসছে। এ বিষয়ে প্রচলিত আইন ও নিয়মের প্রতিপালনে কোম্পানির প্রশ্নাতীত ভূমিকা কোম্পানির স্বচ্ছতা ও আইনানুগ দৃঢ় অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ। বিশ্লেষণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রকাশিত সংবাদটি রাজস্ব প্রয়োগ কৌশল সম্পর্কে অবগত না হয়ে, সম্পূর্ণভাবে অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। আরও বলা হয়, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড ১৯৮৩ সাল থেকে স্টক এক্সচেঞ্জ-এ নিবন্ধিত কোম্পানি হিসেবে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছে। গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং স্বচ্ছভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা, এদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সরকারকে প্রাপ্য রাজস্ব বৃদ্ধি ও প্রদানে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে এবং এ ধরনের নৈতিক অবস্থান অব্যাহত রাখতে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: প্রতিবাদপত্রে মনগড়া ও অপ-সংবাদের অভিযোগ তুললেও প্রতিবেদনের কোন অংশ ভুলÑতা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেনি সিঙ্গার বাংলাদেশ। এমনকি গঁৎবাধা বক্তব্যে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগও উত্থাপন করেনি কোম্পানিটি।
বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ), মূল্য সংযোজন কর শাখার কর্মকর্তারা চলতি বছরের ২৫ মে প্রতিষ্ঠানটির সাভারের গেণ্ডা ওয়্যারহাউস ও রাজধানীর ফুলবাড়িয়া ওয়্যারহাউসে অভিযান পরিচালনা করেন। তল্লাশি করে কাগজপত্র জব্দ করেন। জব্দ করা কাগজপত্র যাচাই করে প্রতিষ্ঠানটির বছরের পর বছর রাজস্ব ফাঁকির সাতকাহন বের করেন। বিশেষ করে সিঙ্গারের ১৯টি ওয়্যারহাউস ও ৩১৪টি বিক্রয়কেন্দ্র ভ্যাট নিবন্ধন আওতার বাইরে থাকা। এসব ওয়্যারহাউস ও বিক্রয়কেন্দ্র থেকে বছরের পর বছর কোনো প্রকার ভ্যাট দেয়া হয় না। মার্জ হওয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করা হয়। এ ছাড়া অবৈধ রেয়াত গ্রহণ ও বিক্রয়ের বিপরীতে ভ্যাট প্রদান না করা। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির জালিয়াতি আরও খতিয়ে দেখছে এলটিইউ।
এলটিইউ’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, দৈনিক শেয়ার বিজ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এতে সিঙ্গারের মতো একটি বহুজাতিক কোম্পানিকে হেয় করা বা মনগড়া কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এ ছাড়া সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড-এর মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির আরও নথিপত্র শেয়ার বিজের হাতে রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলো দিয়েও পরবর্তী সময়ে নিউজ করা হবে।