বিক্রয় প্রবণতায় নিম্নমুখী বাজার

মো. আসাদুজ্জামান নূর: আবার পুঁজিবাজারে সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৬১ দশমিক ৪১ পয়েন্ট হ্রাস পেতে দেখা গেছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বায়ারদের থেকে সেলাররা বেশি অ্যাক্টিভ ছিলেন, যা বাজারে প্রভাব বিস্তার করে। ঘ ক্যাটেগরির শেয়ার বাই প্রেশার এবং ই ক্যাটেগরির শেয়ারে সেল প্রেশার বেশি ছিল। এ কারণে গতকাল বাজার নিম্নমুখী হতে দেখা যায়।

দিনের শুরুতে ক্রেতারা সক্রিয় থাকলেও বিক্রয়ের প্রবণতা থাকায় দিনের শেষে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এ কারণে আগের কার্যদিবসের চেয়ে টাকার অঙ্কে লেনদেন কমতে দেখা গেছে। গতকাল ডিএসইতে মোট এক হাজার ৬৩৭ কোটি ২ লাখ টাকার লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে এটি ছিল এক হাজার ৭২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

গতকাল ১৯টি খাতের মধ্যে ৬টি খাতের শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি ও ১৩টির হ্রাস পায়। লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে বস্ত্র খাত। ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতে ৩১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ২৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। গতকাল ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়। এর বিপরীতে ২৩টির বাড়ে ও অপরিবর্তিত ছিল ২টির।

এরপর ছিল ব্যাংক খাত। ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ অবদান রাখলেও আগের কার্যদিবসের চেয়ে গতকাল লেনদেন কম হয়েছে। গতকাল ২৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেন হলেও আগের কার্যদিবসে এটি ছিল ২৬০ কোটি ৯০ লাখ। এ খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর হ্রাস পেতে দেখা যায়। ২৩টির শেয়ারদর হ্রাস পায়, বাড়ে ৪টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৫টির।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের অবদান ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ খাতে ১৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। আগের দিনে এ খাতের লেনদেন ছিল ১৭৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গতকাল ১৪টির শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়, কমে ১৫টির ও অপরিবর্তিত ছিল একটির।

পরের অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের লেনদেন ১৩৯ কোটি ৭০ লাখ। ৫টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও ৭টির হ্রাসের মধ্য দিয়ে লেনদেন অবদান রাখে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগের কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৯০ কোটি ১০ লাখ টাকা।

গতকাল ১১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদলের মাধ্যমে প্রকৌশল খাত লেনদেন ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ অবদান রাখে। পঞ্চম অবস্থানে থাকা এ খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে বেশি হয়। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৮৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার। গতকাল সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়। ২৮টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার বিপরীতে দর বাড়ে ১৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল মাত্র একটির। এছাড়া জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা, খাদ্য প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেছে।

লেনদেনে বেক্সিমকো শীর্ষে অবস্থান করে। দিন শেষে সাফকো স্পিনের দর সর্বাধিক বেড়েছে এবং অ্যারামিট সিমেন্টের দর সর্বাধিক হ্রাস পায়। গতকাল বাজারে টেলিকমিউনিকেশন ও সার্ভিস অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট খাতে কেনার চাপ বেশি ছিল। অন্যদিকে সিমেন্ট ও ট্যানারি সেক্টরে বিক্রয় চাপ বেশি ছিল। গতকাল টেলিকম খাতে শূন্য দশমিক ২৭৫ শতাংশ মার্কেট ক্যাপিটাল বেড়েছে। বাজারের প্রধান মূলধন শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ কমেছে। এর ভিত্তিতে ১২২টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ২২৬টির ও অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির।

গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬১ পয়েন্ট কমে সাত হাজার পয়েন্টে অবস্থান করে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ৮ ও ১৮ পয়েন্ট কমে ডিএসইএস ও ডিএস-৩০ যথাক্রমে এক হাজার ৪৭০ ও দুই হাজার ৬২০ পয়েন্টে স্থির হতে দেখা যায়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০