রবির শেয়ারধারীদের হতাশা বাড়ছেই

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটার শেয়ার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এর লটারি বিজয়ীরা। পাশাপাশি লেনদেন শুরুর কয়েকদিনের মধ্যে যারা উচ্চদরে এ শেয়ার কিনেছিলেন তারাও অস্বস্তিতে রয়েছেন। শেয়ারদর আরও বাড়বে এমনটি ভেবে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন তারা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এর উল্টো চিত্র। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তারা কেনা দরে শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে দিন যত যাচ্ছে তাদের হতাশা তত বাড়ছে।

গত ২৪ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় রবি। শুরুর দিন থেকে ১০ টাকা অভিহিত দরের  শেয়ারটি দর বৃদ্ধির ঝলক দেখাতে থাকে। টানা ১৫ কার্যদিবস দর বেড়ে শেয়ারদর চলে যায় ৭০ টাকা ১০ পয়সায়। কিন্তু এ দরেও শেয়ার বিক্রি করেননি বেশিরভাগ লটারি বিজয়ী। দর আরও বাড়বে এমন গুজবে শেয়ার ধরে রাখেন তারা।

এ প্রতিষ্ঠানের লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, তালিকাভুক্তির ১৫ দিনের মধ্যে টানা ১১ কার্যদিবস এ শেয়ারে বিক্রেতার অভাব ছিল। এ সময় বাজারে গুজব ছিল বহুজাতিক এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় চলে যাবে। মূলত সে কারণে বেশিরভাগ আইপিও বিজয়ী শেয়ার ধরে রাখেন। ১৫ কার্যদিবসে দর বেড়ে (ক্লোজ প্রাইস) ৭০ টাকা ১০ পয়সায় হলেও এক দিন শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ ৭৭ টাকায় কেনাবেচা হয়। এ হিসাবে আইপিও বিজয়ীদের এক লট শেয়ারদর হয়েছিল ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে লাভ ছিল ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু তখনও তারা শেয়ার বিক্রি করেননি।

এদিকে টানা দর বৃদ্ধির পর এখন টানা দর কমছে রবির শেয়ারের। সর্বশেষ এ শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছে ৩৯ টাকা ৭০ পয়সায়। সেই হিসাবে এখন রবির এক লট শেয়ারদর রয়েছে ১৯ হাজার ৮৫০ টাকা। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে তাদের মুনাফা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। ফলে হা-হুতাশ করছেন লটারি বিজয়ী ও পরবর্তীকালে যারা এ শেয়ার কিনেছিলেন তাদের।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে প্রতিষ্ঠানটির সচিব, আহমেদ ইকবাল পারভেজ শেয়ার বিজকে বলেন, শেয়ারদর কেন বাড়ছে না বিষয়টি আমার জানা নেই। এটি আমাদের জানার কথাও নয়। তবে এতটুকু বলতে পারি আমাদের কোম্পানির আর্থিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। আমাদের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ইপিএস আগের চেয়ে বেড়েছে।

অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে  বিনিয়োগকারীরা বলেন, শেয়ারদর যখন ৬০ টাকা অতিক্রম করে তখন তা বিক্রি করে দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু বেশি লাভের আশায় শেয়ার ধরে রেখেছিলেন তারা। কারণ শেয়ারটির দর ধীরে ধীরে বাড়ছিল। পরবর্তীকালে শেয়ারদর কমতে শুরু করে। বর্তমানে শেয়ারদর আবার আগের অবস্থানে যাবে কি নাÑতা নিয়েও সন্দিহান তারা। তবে কেউ কেউ শেয়ার নিয়ে ইতিবাচক ভাবনাও ভাবছেন।

পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে কোম্পানিটি। রবি আজিয়াটার আর্থিক বিবরণীতে দেখা যায়, সর্বশেষ পাঁচ বছরের মধ্যে দুই বছর লোকসানে ছিল কোম্পানিটি। এর মধ্যে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে লোকসানে ছিল। ২০১৬ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি লোকসান করে ৬৯৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। পরের বছর লোকসান কমে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। পরবর্র্তীকালে ব্যবসায়িকভাবে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে লাভে ফিরে আসে কোম্পানিটি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি মুনাফা করে ১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর আগের বছর (২০১৮ সালে) মুনাফা ছিল ২১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০১৯ সালে আগের চেয়ে মুনাফা অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০