শেয়ার বিজ ডেস্ক: আফগানিস্তানে বিদেশি কোনো মুদ্রার ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক অনলাইন পোস্টে এমন ঘোষণা দেন। আফগান সরকারের নতুন এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দেশটির নড়বড়ে অর্থনীতি আরও সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। খবর: এএফপি, আল জাজিরা।
মঙ্গলবার রাজধানী কাবুলে এক বন্দুক ও বোমা হামলার পরপরই তালেবানের পক্ষ থেকে বিদেশি মুদ্রার বিষয়ে ঘোষণাটি আসে। আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সামরিক হাসপাতালে চালানো ওই হামলা কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন অনেকে।
অনলাইন পোস্টে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের সবাইকে সব ধরনের লেনদেন আফগানিতে (আফগানিস্তানের মুদ্রা) করতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে। কেউ এ আদেশের বিপরীতের গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাতের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সব নাগরিক, দোকানদার, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষকে লেনদেনের সব ক্ষেত্রে এখন থেকে আফগানি মুদ্রা ব্যবহার করতে হবে। একইসঙ্গে যে কোনো লেনদেনে বিদেশি মুদ্রা ব্যবহারে সচেতনভাবে বিরত থাকতে হবে।’
আফগানিস্তানে আফগানির পাশাপাশি মার্কিন ডলারের ব্যাপক চল রয়েছে। দেশটির সীমান্ত এলাকায় বাণিজ্যের জন্য পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী নানা দেশের মুদ্রাও ব্যবহার করা হয়।
এদিকে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন আরও সংকটের মধ্যে পড়ছে। তীব্র অর্থসংকট, খাবারের অভাব ও অভিবাসনের সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। দেশটির সাবেক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে শত শত কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় রিজার্ভ হিসেবে জমা করে। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ওই অর্থ আটকে দেয়া হয়।
তালেবান আসার পর স্থগিত করা হয় বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তাও। এ মুহূর্তে বিদেশে তালেবানের নাগালের বাইরে রয়েছে ৯ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ; যদিও এসব অর্থ ছাড়ে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান।
আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যা তিন কোটি ৯০ লাখ। এর মধ্যে দুই কোটি ৮০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হচ্ছে এবং অনাহারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি)। মাত্র দুই মাস আগে এ সংখ্যা ছিল এক কোটি ৪০ লাখ।