তামাক কোম্পানিকে দেয়া পুরস্কার প্রত্যাহারের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক: তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০১৯’ দেয়ার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশে কার্যরত তামাকবিরোধী ২৯টি সংগঠন। তাদের যুক্তি হলো প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, এটা তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একই সঙ্গে যেভাবে তড়িঘড়ি করে হঠকারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশকে (বিএটিবি) পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জাকর। তাই অবিলম্বে নিজেদের ভুল স্বীকার করে প্রদত্ত পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তারা।

তামাকবিরোধী ২৯টি সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা এ বিষয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়য়, ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান নীতিমালা ২০২০-এ তামাক বা তামাক জাতীয় পণ্যভিত্তিক বা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কারের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়কে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলাম। কিন্তু যে বিবেচনায় এই নীতিমালায় তামাক কোম্পানিকে পুরস্কারের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, সেই একই বিবেচনায় ২০১৯ সালের রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারের জন্য তামাক কোম্পানিকে বিবেচনা না করলে তা হতো জনস্বার্থের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। ফলে তামাক কোম্পানিকে এই পুরস্কার প্রদান সুস্পষ্টভাবে পুরস্কার প্রদান নীতিমালার নৈতিক অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’

সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ জানানো ২৯টি সংগঠন হলোÑএইড ফাউন্ডেশন, আর্ক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা), বিসিসিপি, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), বৃত্ত ফাউন্ডেশন, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), সিএলপিএ ট্রাস্ট, ডেভেলপমেন্ট অ্যাকটিভিটিজ অব সোসাইটি (ডাস), ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ফর রুরাল পুওর, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,  গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস), নাটাব, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন, প্রজ্ঞা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, সুশাসনের জন্য প্রচারাভিজান (সুপ্র), তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ), টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল, উবিনীগ, উন্নয়ন সমুন্নয়, ভয়েস, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও ইপসা।

তারা আরও বলেন, ‘তামাক কোম্পানিগুলো এমন একটি পণ্যের বাণিজ্য করে, যা মানুষকে মৃত্যুর পথে নিয়ে যায়। দেশে তামাক সেবনজনিত রোগে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায় এবং চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতা হারানোর কারণে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকারও অধিক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। এই পুরস্কার প্রদান তামাক কোম্পানিকে তাদের ব্যবসা প্রসারে উৎসাহিত করবে, যা দেশের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০