বিশ্বব্যাংক-আইএলও’র কর্মশালায় অভিমত : কর্মসংস্থান বাড়াতে জাতীয় কৌশল প্রণয়ন প্রয়োজন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে গত বছরগুলোতে বিপুল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে। চাকরিবিহীন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে বাংলাদেশে। এ অবস্থার উত্তরণে সক্রিয়ভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য একটি জাতীয় কর্মসংস্থান কৌশল নির্ধারণ জরুরি। গতকাল সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এ কর্মশালায় সহযোগিতা করে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের জবস ডায়াগনস্টিকস প্রতিবেদনের প্রধান লেখক থমাস ফেরল, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ-ভুটান ও নেপালের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার প্রমুখ।

রাজশ্রী পারালকার বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হলে সামষ্টিক ও ব্যস্টিক অর্থনৈতিক নীতি ও কাঠামোয় নীতিগত সংস্কার করতে হবে। ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন, নগরায়ণ ও অবাধ চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা জাতীয় কর্মস্থান কৌশল প্রণয়নের প্রয়োজন মনে করি।

বক্তারা আরও বলেন, বার্ষিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮ শতাংশে নেমেছে ২০১০-১৫ সময়ে, যা ২০০৩-১০ সময়কালে ২ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল। কর্মসংস্থানের বর্তমান পরিমাণের সিংহভাগই তৈরি পোশাক খাতের।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিসিএস) ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে জবস ডায়াগনস্টিক শীর্ষক এক গবেষণায় উল্লেখ করা পরামর্শের বরাত দিয়ে বক্তারা বলেন, এ সংকট উত্তরণের জন্য বাংলাদেশকে রফতানিমুখী অন্যান্য খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া মানসম্মত ও লিঙ্গ বৈষম্যহীন কর্মসংস্থান নিশ্চিতে গুরুত্ব দিতে হবে। দেশের চাকরিজীবীদের মধ্যে মাত্র এক-পঞ্চমাংশ মানসম্মত বেতন পায়। অধিকন্তু কর্মজীবী নারীর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নারী বিনামূল্য শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে। বৈশ্বিক অভিবাসন ব্যবস্থা অনেক বাংলাদেশির জন্য ভালো বেতনের চাকরির সুযোগ এনে দিয়েছিল, যদিও সেখানে ব্যাপক ব্যয় নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে।

বিশ্বব্যাংকের জবস ডায়াগনস্টিকের প্রধান লেখক থমাস ফেরল বলেন, ‘ব্যাপক কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশকে উৎপাদনশীলতার প্রবৃদ্ধি ঘটাতে হবে। শিল্প ও সেবা খাতের বৈচিত্র্য আনতে হবে। ক্রমবর্ধমান রফতানি ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি নগরায়ণকে অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে।’

আলোচকরা এ সময় কর্মসংস্থান কৌশলপত্র নির্ধারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। নিরবচ্ছিন্ন প্রবৃদ্ধি, তৈরি পোশাক ও অন্যান্য শিল্প খাত, এফডিআই, নারীশ্রমিকের বাজার ইত্যাদির দিকেও গুরুত্ব দেন। এ সময় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) তাদের পক্ষ থেকে এমপ্লয়মেন্ট ডায়াগনস্টিক উপস্থাপন করে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০