শেয়ার বিজ ডেস্ক: স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত কপ২৬ শীর্ষক জলবায়ু সম্মেলনকে ব্যর্থ বলেছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার শহরটির রাস্তায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। সম্মেলনকে দুই সপ্তাহের ব্যবসায়িক উদ্?যাপন বলে সমালোচনা করে গ্রেটা বলেন, ‘ব্লা, ব্লা, ব্লা’। খবর: এএফপি।
জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে গ্লাসগোতে বিক্ষোভ করেন হাজারো মানুষ। এদিন বিক্ষোভে যোগ দেন সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। বিক্ষোভে অংশ নেয়া হাজারো মানুষকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, কপ২৬ সম্মেলন যে ব্যর্থ, তা আর অজানা কিছু নয়। এটিকে এখন আর জলবায়ু সম্মেলন বলা যায় না; বরং এটি পরিবেশ রক্ষার নামে লোক দেখানো উৎসব ছাড়া কিছুই নয়। জলবায়ু সম্মেলনকে সবুজ মুছে ফেলার উৎসব বলেও কটাক্ষ করেন গ্রেটা।
গ্রেটা মনে করেন, এ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যতটা না কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে জোর দেন, তার চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগ দেন। এ সম্মেলন মূলত দেশগুলোর জন্য দুই সপ্তাহের ব্যবসায়িক উদ্যাপন।
বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশের প্রতিনিধি গ্লাসগোতে কপ২৬ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। গত ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রথম সপ্তাহের আলোচনার পর দেশগুলোর পক্ষ থেকে কয়লার ব্যবহার বন্ধ ও জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিদেশি অনুদান বন্ধের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে জলবায়ুর পরিবর্তন ঠেকাতে বিজ্ঞানীরা যে বিপুল কার্বন কমানোর কথা বলে থাকেন, তা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত বলা হয়নি।
থুনবার্গ আক্ষেপ করে বলেন, ‘বিশ্বনেতারা বৈজ্ঞানিক হিসাব-নিকাশ উপেক্ষা করতে পারবেন না, আমাদেরও এড়িয়ে যেতে পারবে না। তারা এভাবেই নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।’ বিক্ষোভে যোগ দেয়া ১৮ বছর বয়সী ভ্যালেন্তিনা রুয়াস বলেন, ‘বিশ্বনেতারা আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য সম্মেলন করছেন। কিন্তু এখনই আমরা জলবায়ু সংকটে রয়েছি। তাদের জলবায়ুনীতি যদি সত্যিই জলবায়ু রক্ষার জন্য না হয়, তাহলে তা মেনে নেব না।’
অনেক শিক্ষার্থীকেও বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানাতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছেÑ‘জলবায়ু পরিবর্তন বাড়ির কাজের চেয়েও খারাপ’।
কপ২৬ সম্মেলনের শুরুতে শতাধিক দেশের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা এ দশকে মিথেন নিঃসরণ অন্তত ৩০ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা দীর্ঘ মেয়াদে কমানো সম্ভব হবে না।
গত শুক্রবার পরিবেশ আন্দোলনকর্মী ভানেসা নাকাতে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে তার মাতৃভূমি উগান্ডার মানুষ ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে। তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ মারা যাচ্ছে, শিশুরা স্কুল থেকে ঝরে পড়ছে, খামার ধ্বংস হচ্ছে।’