হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপে কী করবেন

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না। অজান্তেই অনেকে উচ্চ রক্তচাপ বয়ে বেড়ান। আবার উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ার পরও অনেকে অবহেলা করেন। তারা খাবারে পরিমিত লবণের ব্যবহারের কথা ভুলে যান এবং অধিক তেল-চর্বিসমৃদ্ধ খাবার, ভাজাপোড়া খাবার, ট্রান্সফ্যাটসমৃদ্ধ বেকারি, ফাস্ট ফুড খাওয়া বা কোমল পানীয় পান চালিয়ে যান। শরীরের ওজন ঠিক রাখা, ধূমপান বা মদ্যপান বর্জন করা, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমের অভ্যাসও অনেকের গড়ে ওঠে না। মানসিক চাপ, স্ট্রেস বা উদ্বিগ্নতায় ভোগা মানুষও কম নয়। অধিকাংশ মানুষই ডাক্তারের কাছে না গেলে রক্তচাপ মাপেন না। আবার কোনো একসময় রক্তচাপের ওষুধ শুরু করেছেন সেটাই চলিয়ে যান; রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কি নেই, তা জানেন না।

জানা থাকুক আর না থাকুক, এসব কারণে কোনো এক সময় কারও রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। হঠাৎ রক্তচাপ খুব বেড়ে যাওয়া বিপজ্জনক। শরীরের হƒদ্?যন্ত্র, কিডনি, রক্তনালি, চোখ ও মস্তিষ্ক তৎক্ষণাৎ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সাধারণত রক্তচাপ ১৮০/১২০ মিলিমিটার পারদের ওপরে উঠলে এ রকম আশঙ্কা তৈরি হয়। কারও ক্ষেত্রে এমনকি এ রকম মাত্রার রক্তচাপেও কোনো লক্ষণ থাকে না। আবার কারও প্রথমবারই রক্তচাপ শনাক্ত হতে পারে এ রকম বিপজ্জনক মাত্রায়। সে ক্ষেত্রে কী করবেন?

অতি উচ্চ রক্তচাপের কারণে শরীরের বিশেষ অঙ্গগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেমন দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, বুকে ব্যথা বা বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, লালচে প্রস্রাব, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাথাব্যথা, শরীরের অংশবিশেষের বা একাংশের দুর্বলতা প্রকাশ পাওয়া কিংবা অবশ হওয়া এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীর খিঁচুনি শুরু হয়।

রক্তচাপ হঠাৎ খুব বেড়ে গেলে এবং সঙ্গে এসব লক্ষণ থাকলে অবশ্যই রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। একে হাইপারটেনসিভ ইমারজেন্সি বলা হয়। জরুরি অবস্থায় রক্তচাপ কমানোর ওষুধ ও চিকিৎসাপদ্ধতি ভিন্ন। এসব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার দরকার পড়ে। সাধারণ ওষুধে তা করা যায় না। আবার এসব রোগকে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখার দরকার পড়ে। হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্ট ফেইলর হলে এবং মহাধমনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দ্রুত রক্তচাপ কমাতে হয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ধীরে ধীরে চিকিৎসক কারণ বুঝে উপযুক্ত ওষুধ ব্যবহার করে রক্তচাপ কমান। তাই সবার আগে আকস্মিক অতি উচ্চ রক্তচাপে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। (বাকি অংশ আগামীকাল)

ডা. শরদিন্দু শেখর রায়

হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় হƒদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০