ঢাকায় সিএনজিচালিত বাস তিন শতাংশ’

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে সিএনজিচালিত বাস মাত্র তিন দশমিক ২৬ শতাংশ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকায় বাস-মিনিবাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বলা হচ্ছে, ঢাকা ও দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সিএনজিচালিত। এসব বাসে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ১২০টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৩ কোম্পানির ১৯৬টি বাস সিএনজিচালিত পেয়েছি। এটি মোট গণপরিবহনের মাত্র তিন দশমিক ২৬ শতাংশ।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেট তুরাগ ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ৪০টি, অনাবিল সুপার লিমিটেডের পাঁচটি, প্রভাতী-বনশ্রী পরিবহন লিমিটেডের ১২টি, শ্রাবণ ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ৩০টি, আসিয়ান ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ২০টি, মেঘালয় ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের পাঁচটি, হিমালয় ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ১৪টি, ভিআইপি অটোমোবাইলস  লিমিটেডের দুটি, মেঘলা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ২৭টি, শিকড় পরিবহনের আটটি, বিকল্প অটো সার্ভিসের একটি, গাবতলী লিংক মিনিবাস সার্ভিসের (৮ নম্বর) ১১টি ও ৬ নম্বর মতিঝিল বনানী কোচ লিমিটেডের ২১টি বাস সিএনজিচালিত। এছাড়া অনুসন্ধানে আরও কিছু সিএনজিচালিত বাস পাওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়।

সারাদেশে সব বাসে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে নির্ধারণ করে দেয়া ভাড়াই নিতে হবে বলে জানিয়েছেন খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

তিনি বলেন, কোনোভাবে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া যাবে না। এ নির্দেশনা না মানলে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবস্থা নেবেন। আমরা আদালতকে সহযোগিতা করব। সড়কে আমাদের মালিক-শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ১১টি ভিজিলেন্স টিম থাকবে। তারা মাঠে সরাসরি কাজ করবে।

বাস মালিক সমিতির এ নেতা বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ‘সিটিং ও গেটলক সার্ভিস’ বন্ধ করে দেয়া হবে। এ সময়ের পর থেকে সড়কে এ ধরনের কোনো সার্ভিস নিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে না। নির্দেশনা না মানলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বাস ডাম্পিং করা হবে। সিটিং সার্ভিসের কোনো নিয়মনীতি নেই। তারা নিজেদের মতো করে যাত্রী পরিবহন করে। এতে ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। তাই সিটিং বা গেটলক সার্ভিস থাকবে না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব জানান, আগামী তিন দিনের মধ্যে ডিজেল ও সিএনজিচালিত বাসে স্টিকার লাগানো হবে। এতে আলাদাভাবে বাসগুলো চেনা যাবে।

দূরপাল্লার বাসের বিষয়ে তিনি বলেন, কাউন্টারগুলোয় ভাড়ার মূল্যতালিকা থাকবে। যাত্রীরা সে তালিকা দেখে টিকিট কিনবেন। যে কাউন্টারে মূল্যতালিকা থাকবে না, সে কাউন্টারকেই জরিমানা করবেন বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে প্রতিদিনই বাসের যাত্রীদের সঙ্গে হেলপারদের ঝগড়া হচ্ছে। হেলপাররা বলে থাকেন, বাস মালিকরাই অতিরিক্ত ভাড়া নিতে বলেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ শেয়ার বিজকে বলেন, হেলপারদের সঙ্গে তো মালিকদের দেখাই হয় না, জানাবে কীভাবে? এটা তাদের মনগড়া কথা। তারাই অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে মালিকদের কাঁধে দোষ চাপাচ্ছে। তারাই যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। আমরা এসব বিষয়ে কঠোর হব। কোনো বিশৃঙ্খলা মানা হবে না।

আমাদের ভিজিলেন্স টিম এসব বিষয় তদারকি করবে ও ব্যবস্থা নেবে।

২০১৭ সালেও সিটিং সার্ভিস বন্ধের কথা বলেছিলেন, এবারও বললেন, এটা কি শুধুই বলার জন্য বলা, নাকি কাজের কথা সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, আমরা কাজ করেই তার প্রমাণ দেব। এবার আর কোনো ছাড় নয়।

কিলোমিটারপ্রতি বিআরটিএ’র নির্ধারণ করে দেয়া ভাড়া না নিয়ে ওয়েবিল ও চেকপয়েন্টের কথা বলে নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, সেজন্যই তো আমরা সিটিং সার্ভিস বাদ দেব। আগামী তিন দিনের মধ্যে এগুলো মুছে ফেলা হবে। যারা শুনবে না, তাদের বাস ডাম্পিং হবে। সব বাসে একই হারে ভাড়া নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলীসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিকাল ৩টায় ঢাকায় চলাচল করা বাসের ১২০টি কোম্পানির চেয়ারম্যান ও এমডিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। সভায় তাদেরও কঠোর নির্দেশনার কথা জানিয়ে দেয়া হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০