কেএম রুবেল, ফরিদপুর: চিকিৎসাসেবা পেয়ে খুশি ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের হাজারও পরিবার। দীর্ঘদিন এ চরের মানুষ সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। চরাঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে দুর্গম এ পদ্মাচরে নির্মিত হয়েছে মাজেদা বেগম ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র থেকে এখন নিয়মিত চিকিৎসা পেয়ে খুশি তারা।
ফরিদপুর সদর উপজেলার অবহেলিত জনপদ ডিক্রীরচর ইউনিয়ন। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। চরাঞ্চলের এসব মানুষের চিকিৎসাসেবার কথা চিন্তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ ৫০ শতাংশ জমি দান করেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় নির্মিত হয়েছে মাজেদা বেগম ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। নির্মাণকাজ শেষে এখন নিয়মিত হাসপাতালটি থেকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষের।
এ প্রকল্পে রয়েছে তিন তলাবিশিষ্ট দুটি ভবন ও সীমানা প্রাচীর। একটিতে ওটি রুমসহ ১০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন। অন্যটি ছয় ইউনিটের আবাসিক ডরমেটরি ভবন। ডরমেটরি ভবনে তিনজন ডাক্তার ও তিনজন ভিজিটরের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
চিকিৎসা নিতে আশা রহিমা বেগম বলেন, আমাদের চরাঞ্চলে অনেক সমস্যা। রাস্তা-ঘাট নাই। আমরা অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাতে যেতাম শহরে। ডেলিভারির রোগীর ব্যাথা উঠলে ঘোড়ার গাড়ি, মোটরসাইকেল, তারপর বিশাল পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে, অটো কিংবা অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে শহরের হাসপাতালে নিতে হয়। এভাবে পথিমধ্যে রোগীও মারা যেত। আবার কোনো কোনো সময় পথেই ডেলিভারি হতো। এখন হাসপাতাল হয়েছে। এখন আমরা এখান থেকে সেবা পাচ্ছি।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত হয়েছে এ হাসপাতালটি। পরবর্তী সময়ে ২০ শয্যায়
উন্নিত করা হবে।
এ কে আজাদ বলেন, ডিক্রিরচরের মানুষ সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। তাদের জন্য এ মাজেদা বেগম ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখন চরাঞ্চলের মানুষ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। পর্যায় ক্রমে এটিকে ২০ শয্যা করা হবে। চরাঞ্চলের মানুষদের বিনা খরচে ওষুধ দেয়া হবে। এখন আর চরের মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন না।
ফরিদপুর পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজাম্মেল হক জানান, এখানে গর্ভবতী মায়েরা নিয়মিত সেবা পাচ্ছেন। বর্তমানে এখানে একজন মেডিকেল অফিসার, সেকমো ও ভিজিটরসহ ফুল টিম মানুষের ২৪ ঘণ্টা সেবা দিচ্ছেন।