নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই পুঁজিবাজারের এসএমই প্ল্যাটফর্মে কোম্পানির সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. আব্দুল হালিম।
গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত এসএমই প্ল্যাটফর্মে যোগ্যতাসম্পন্ন বিনিয়োগকারী নিবন্ধন প্রক্রিয়া ও ট্রেডিং পদ্ধতি-বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
মো. আব্দুল হালিম বলেন, বিশ্বের যে কোনো দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পেলে তারা ধীরে ধীরে বৃহৎ কোম্পানিতে পরিণত হবে। ডিএসই’র এসএমই প্ল্যাটফর্মে কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির মাধ্যমে এ কোম্পানিগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ পাবে। এছাড়া দেশে অনেক কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর রয়েছে। কিন্তু তাদের চাহিদার তুলনায় এসএমই প্ল্যাটফর্মে মাত্র আটটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। তালিকাভুক্তির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এসএমই উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে হবে। আর মার্কেট মেকারদের ব্রিজ হিসেবে এসএমই উদ্যোক্তাদের মেধা ও কোয়ালিফাইড ইনভেস্টরদের অর্থের সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। তবেই এসএমই আরও বেশি গতিশীল হবে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএসই’র পরিচালক অধ্যাপক ড. একেএম মাসুদ ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন।
কর্মশালার বিশেষ অতিথি বলেন, বাংলাদেশে এসএমই খাতের অর্থায়নের উৎস ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং খাত। মূলত ব্যাংকনির্ভর অর্থায়নের ফলে এ খাতের পরিচালন ব্যয় যেমন বাড়ছে, ঋণ-মূলধনের অনুপাতের অসামঞ্জস্যও বাড়ছে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে আমাদের দেশে বিপুলসংখ্যক স্বল্পমূলধনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্ভাবনাময় এ প্রতিষ্ঠানগুলো শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে।
তিনি আরও বলেন, এসএমই খাতকে অধিকতর গতিশীল করার লক্ষ্যে ডিএসই বেশ কয়েটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এসএমই প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন ফি কমানো, নানা ধরনের সভা-সেমিনারের মাধ্যমে এসএমই উদ্যোক্তাদের পুঁজিবাজারমুখী করা। এছাড়া প্রয়োজনীয় আইনি সংরক্ষণের জন্য নানা কর্মশালা অব্যাহত রয়েছে। আর এসবই করা হচ্ছে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও পেশাদার বিনিয়োগকারী তৈরি করার জন্য। ডিএসই এ খাতের উন্নয়নে কাজ করছে।
ডিবিএ সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ধরনের প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন কোম্পানিগুলো এসএমই প্ল্যাটফর্মের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবগত হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও প্রোগ্রামের আয়োজনের জন্য ডিএসই’র প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে স্বাগত বক্তব্যে ডিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ডিএসই গত ৩০ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এসএমই প্ল্যাটফর্মের লেনদেন শুরু করেছে। ডিএসই এসএমই প্ল্যাটফর্মে বর্তমানে নতুন চারটি কোম্পানি ও ওটিসি মার্কেট থেকে আসা চারটি কোম্পানিসহ মোট আটটি কোম্পানি রয়েছে। প্ল্যাটফর্মকে আরও গতিশীল করার জন্য কাজ করছে। বর্তমানে এসএমই উদ্যোক্তাদের ও বিনিয়োগকারীদের কিছু ধারণাগত পার্থক্য রয়েছে। আর তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যদানে এ ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া ডিএসই বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
ডিএসই ট্রেনিং একাডেমির প্রধান ও সিনিয়র ম্যানেজার মুহাম্মদ রনি ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র লিস্টিং অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলাম। মূল প্রবন্ধে তিনি যোগ্যতাসম্পন্ন বিনিয়োগকারীদের যোগ্যতা, ইএসএসে নিবন্ধন প্রক্রিয়া, রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশনে অংশগ্রহণ ও পদ্ধতি এবং এসএমই ট্রেডিং কার্যক্রমের নানা বিষয় তুলে ধরেন।