নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষার মানোন্নয়নে জেলা সদরের সরকারি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজগুলোর উন্নয়নে একটি সংশোধিত প্রকল্পসহ ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে তিন হাজার ৭২৩ কোটি ছয় লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৬০৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৯৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকার জোগান প্রাক্কলন করা হয়েছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ভারপ্রাপ্ত সচিব মফিজুল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এএন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরীসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে দেশের বৃহত্তর তিন সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের একটি প্রকল্প রয়েছে। প্রকিউরমেন্ট অব ইকুইপমেন্ট ফর সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেকে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়ে বলেছেন, এখন থেকে হাইওয়ের পাশে স্কুল থাকলে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারের জন্য প্রয়োজনে পুলিশ রাখতে হবে। যাতে তারা গাড়ি থামিয়ে হলেও শিশুশিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারে সহায়তা করেন। তাছাড়া প্রতি ছয় মাস পরপর রাস্তা পারাপারে জনসচেতনতামূলক মাইকিং করার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা এখনও প্রাথমিক ধাপের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। তখন বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, জাপান ও ইউরোপের দেশগুলো ৫০ থেকে ১০০ বছর আগে যে কাজ করেছে আমরা এখন তাই করছি। এসব কাজ হলে এর সুফল পাবে সবাই।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের পরিবেশে কার্বন নির্গমন কমানো, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্যানিটারি অবস্থার উন্নয়ন করতেই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছেÑশিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা সদরে অবস্থিত সরকারি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজগুলোর উন্নয়ন, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে এক হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। ফরিদপুর টেক্সাইল ইনস্টিটিউট স্থাপনে ব্যয় হবে ৯৭ কোটি টাকা। সিলেট টেক্সাইল ইনস্টিটিউট স্থাপনে ব্যয় ৯৫ কোটি টাকা। বন্ড ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয়করণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৮১ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপনে ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। শ্রম অধিদফতরের ছয়টি অফিস পুনর্নির্মাণ ও আধুনিকীকরণে ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এছাড়া অন্তর্র্বর্তীকালীন পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৬১২ কোটি টাকা। গুরুত্বপূর্ণ বরিশাল অঞ্চলে আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণে ব্যয় হবে ৫২১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণে ব্যয় হবে ২৫১ কোটি টাকা এবং কেরানীগঞ্জে বিউবোর নিজস্ব ভূমি উন্নয়ন ও সীমানা দেয়াল নির্মাণ প্রকল্পে বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
Add Comment