করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাংলাদেশের টিকা উৎপাদন করে অন্য দেশকে দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১৫ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে এক সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় আমরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। জলবায়ু সম্মেলনে গিয়ে আমি এটাও বলে এসেছি, আমরা নিজেরা টিকা তৈরি করতে চাই। টিকা তৈরিতে যে বাধাগুলো আছে, সেগুলো সরিয়ে দিতে হবে। এটি উন্মুক্ত করতে হবে।

টিকা জনগণের প্রাপ্য উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কোনো মানুষ যেন করোনার টিকা থেকে দূরে না থাকে। আমাদের সুযোগ দিলে আমরাও টিকা উৎপাদন করবো। আমাদের সেই সক্ষমতা আছে। সেজন্য জমিও কিনে রেখেছি। আমরা কিন্তু উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে পুরস্কার প্রবর্তন করায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানাতে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ বিধিতে সাধারণ আলোচনার জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাব তোলেন। তা নিয়ে আলোচনা করেন সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। আলোচনা শেষে সংসদে সেটি সর্বসম্মতিক্রমে তা গ্রহণ করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন। উনার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য পদ লাভ করে বাংলাদেশ। পৃথিবীর কোনো দেশ স্বাধীনতার পর এত অল্প সময়ে এত স্বীকৃতি আদায় করতে পারেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আমাদের ছিল বলেই সেটা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য। এ দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তির জন্য, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য, স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি যখন অর্থনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা দিলেন, দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচির ঘোষণা দিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে তাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় গুলি-অস্ত্র, দুর্নীতি এটাই ছিল জননীতি। এর বাইরে একটা দেশকে যে উন্নত করা যায়, সেদিকে কোনো আন্তরিকতাই আমরা দেখিনি।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে আসার পর দেখেছি, বিজ্ঞান পড়েই না মানুষ। বিজ্ঞানের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। গবেষণা তো ছিলই না। কোনো বিশেষ বরাদ্দও ছিল না। এখন আমরা পিছিয়ে নেই। আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের জনগণকে। তারা বারবার আমায় ভোট দিয়েছে। সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। এক দশকের ভেতরে বাংলাদেশের পরিবর্তন সারাবিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের কাউকে বিদেশে গিয়ে কথা শুনতে হয় না।

উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ আমাদের কিছু ইয়ং সংসদ সদস্য মিলে ইয়ংবাংলা স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়েছে। এ প্রোগ্রামের জন্য আমরা বিশেষ বরাদ্দও রেখেছি। ছেলেমেয়েরা যদি কেউ উদ্যোগ নিতে চায় আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। অনলাইনে কেনাবেচা, ই-কমার্স, টেন্ডার এগুলোতো হয়েছে বাংলাদেশে। সামনে আরও সময় আছে। আরও হবে। এক দিনে তো হয় না। ধাপে ধাপে হয়।

‘মোটিভ ক্রিয়েশন’ নামে উগান্ডার একটি সংগঠন এবারের ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ পুরস্কার পেয়েছে। প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার তুলে দেন। এ পুরস্কার দেওয়া হবে প্রতি দুই বছরে একবার, যার আর্থিক মূল্য ৫০ হাজার ডলার।

উগান্ডার ‘মোটিভ ক্রিয়েশন’ এর প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিন ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশেরও কোনো না কোনো উদ্যোক্তা এ পুরস্কার পাবে বলে আমি আশা করি। বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার প্রবর্তন করায় বক্তব্যকালে ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর আগে এই আলোচনায় অংশ নেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আমির হোসেন আমু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ওয়াসিকা আয়শা খান, বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, বিএনপির হারুনুর রশীদ, জাপার রুস্তম আলী ফরাজী ও পীর ফজলুর রহমান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০