ক্রীড়া ডেস্ক: ৬১৭ দিন পর ঘরের মাঠে দর্শক ফিরিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এ সুযোগ মাটিতে ফেলতে দেননি টাইগার সমর্থকরা। বিশ্বকাপে ভরাডুবির পরও পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ ‘হাউস ফুল’ ছিল। ওই ম্যাচ ৪ উইকেটে হারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। তবু সমর্থন দেয়া থেকে বিরত থাকেননি সমর্থকরা। স্বাগতিকদের সিরিজে ফেরার লড়াইয়ে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে মুখর করেছেন গোটা স্টেডিয়াম।
সিরিজ শুরুর আগে অধিনায়ক রিয়াদ বলেছিলেন, এ সিরিজ দিয়ে সমর্থকদের বিশ্বাস ফেরাতে চায় তার দল। নিশ্চিত করে বলা যায়, সে কথাও রাখতে পারলেন না অধিনায়ক। প্রথম ম্যাচে স্কোর বোর্ডে ১২৭ রান তুলেও ৪ উইকেটে হার। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে আরও ব্যর্থ টাইগারদের ব্যাটিং লাইনআপ। পুঁজি মাত্র ১০৮ রানের, যা অনুমেয় সেটিই হলো শেষ পর্যন্ত। পাকিস্তানি ব্যাটাররাও ঝুঁকি নিতে চাইলেন না। ধীরে-সুস্থে, দেখে-শুনে ব্যাটিং করার দিকেই ছিল সবচেয়ে বেশি মনোযোগী। ফলে ১০৯ রানের লক্ষ্যে ১১ বল হাতে রেখে পার হয়ে গেল পাকিস্তান। এতে ৮ উইকেটে ম্যাচ জয়ের সঙ্গে সিরিজ জয়টিও নিশ্চিত করে রাখল সফরকারীরা। ফলে শেষ ম্যাচটি এখন পরিণত হয়েছে শুধুই আনুষ্ঠানিকতায়।
১০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র দুটি উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। শুরুতে বাবর আজমকে বোল্ড করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসে তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বল করতে আসেন মোস্তাফিজ। তার লেন্থ বলটিকে খেলতে যান বাবর আজম। কিন্তু ভেতরের কানায় লাগিয়ে বলটিকে টেনে নেন স্ট্যাম্পে। বোল্ড হয়ে গেলেন তিনি মাত্র ১ রানে। বল খেলেছেন তিনি ৫টি। আগের ম্যাচেও একইভাবে বোল্ড হয়েছিলেন বাবর আজম। ওই ম্যাচে তাসকিন আহমেদের একই ধরনের একটি বল খেলতে গিয়ে নিজের স্ট্যাম্পে টেনে আনেন বাবর।
দলীয় ৯৭ রানের মাথায় লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে সাইফ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ইনফর্ম ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৪৫ বল খেলে ৩৯ রান করেন তিনি। ৪টি বাউন্ডারি মারেন।
ফাখর জামান ছিলেন দুর্বোধ্য। ৫১ বল খেলে তিনি করেন ৫৭ রান। মূলত মোহাম্মদ রিজওয়ান আর ফাখর জামানের ব্যাটিং দেখলেই বোঝা যায়, কতটা রয়েসয়ে ব্যাটিং করে গেছেন তারা। ৮৫ রানের জুটি গড়েছেন তারা ৭৮ বলে। টি-টোয়েন্টিতে রীতিমতো অবিশ্বাস্য স্লো ব্যাটিং।
কিন্তু ১০৯ রান তাড়া করতে গিয়ে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা অহেতুক তাড়াহুড়ো করেননি ও উইকেট হারাননি। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ উইকেটের পতন ঘটাতে ব্যবহার করেন ৮ বোলার। আগের ম্যাচে অধিনায়ক বোলিং করাননি লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে দিয়ে। এ কারণে তুমুল সমালোচনার শিকার হন তিনি।
ফলে গতকাল মেহেদী হাসান ও তাসকিন আহমেদের পর আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে দিয়ে পূর্ণ ৪ ওভার বোলিং করালেন মাহমুদউল্লাহ। বিপ্লব রান দিয়েছেন ৩০টি, সবচেয়ে বেশি ইকনোমি রেটে (৭.৫০)। উইকেট নিয়েছেন ১টি। আফিফ হোসেন ধ্রুব, নাজমুল হোসেন শান্ত, এমনকি সাইফ হাসানকে দিয়েও বোলিং করালেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে শরিফুল ইসলামের অসম্পূর্ণ ওভারের একটি বলই করেছিলেন সাইফ হাসান। মাহমুদউল্লাহ নিজে বোলিং করলে বোলার হতেন ৯ জন।