পারভীন লুনা, বগুড়া: বগুড়ায় শীতের শুরুতেই গরম কাপড় কেনা বেচার দোকান গুলোতে ভীড় জমতে শুরু করেছে। শহরের মার্কেট গুলোতে শীতের কাপড় কেনার ভীড় তেমন চোখে না পরলেও ফুটপাত এবং হকার্স মার্কেট গুলোতে উপছে পড়া ভির চোখে পড়েছে। এতসকল দোকানে মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্তপরিবার গুলো শীতের কাপড় কিনতে ভীড় করছেন।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাট-বাজারে কাপড়ের দোকান সাজিয়ে বসেছেন। বগুড়ার হাট-বাজার ও ফুটপাত থেকে শুরু করে আধুনিক শপিং মলে এখন ক্রেতাদের চাপ বাড়তে শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে বগুড়ার সদর উপজেলার সাবগ্রাম হাটে গিয়ে দেখা যায়, দোকানিরা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে দোকানে সোয়েটার, জ্যাকেট, কোর্ট, টুপি, প্যান্ট, টাওজার, মুজা, বাচ্চাদের নানা ডিজাইনের শীতের পোশাক। সেখানে বেশি বিক্রি হচ্ছে ছোট বাচ্চাদের শীতের কাপড়। দোকানগুলোতে ১০০টাকা থেকে শুরু করে ৬০০টাকার কাপড় পাওয়া যাচ্ছে।
বগুড়ার হকার্স মার্কেটে শীতের কাপড় কিনতে আসা মজনু মিয়া জানান, আমি গরিব মানুষ, রিসকা চলে খাই। বাড়িতে ৬জন মানুষ। শীত আসিচ্ছে তাই পরিবারের লোকজনের জন্য গরম কাপড় কিনিচ্ছি ৪২০টাকা দিয়ে ছোট বড় ৭টা কাপড় কিননু।
হকার্স মার্কেটের স্মৃতি ফ্যাশনের বিক্রেতা হোসেন বলেন, ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে আমরা সব ধরনের কাপড় দোকানে রেখেছি। আমাদের কাছে এবার জিন্স, ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ফুল স্লিভ পোলো শার্ট ও জ্যাকেট নতুন এসেছে।

মার্কেটে কাপড় কিনতে আসা মাসুদ রানা বলেন, এটা গরিবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত। এখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গরম কাপড় কিনতে পারে। কাপড়ের দাম হাতের নাগালে থাকায় সবাই সাধ্যমতো গরম কাপড় কিনতে পারেন।
শহরের প্রানকেন্দ্র সাত মাথার মোড়ে ফুটপাতে শীতের জামা বিক্রেতা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘শহরে কেবল শীত পড়ল, শীতের শুরুতে ভালোই বিক্রি হচ্ছে। আমরা লট হিসেবে মাল কিনে খুচরা বিক্রি করছি। একদাম ৮০০ টাকায় প্রতিটা লেদারের জ্যাকেট বিক্রি করি। প্রতিদিন ১৫-২০টি করে সেল হয়।’
শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী আলম বলেন, ‘শহরে শীত পড়েছে শীতের শুরুতেই ব্যবসা ভালো হয়। বিশেষ করে বিদেশী কম্বল, জ্যাকেট, লেদার জ্যাকেটের চাহিদা বেশি।’
ক্রেতা নাজমুল বলেন, ‘মোটামুটি শীত চলে এসেছে, তাই আমার জন্য এবং পরিবারের জন্য শীতের পোশাক কিনলাম। নিউমার্কেটে, রানার প্লাজা, অন্যান্য শপিংমলের ভেতর থেকে কিনতে গেলে দাম অনেক বেশি পড়ে, তাই বাইরে থেকে কিনছি। প্রতি বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি নিচ্ছে। শীতবস্ত্র যেহেতু লাগবেই তাই টাকার কথা চিন্তা করছি না।
নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা নাটাই পড়া বাসিন্দা হোসেন জানান, শীত এখনো না এলেও ধীরে ধীরে ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে শিশুরা ঠান্ডা-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে তিনি তিন বছর বয়সী মেয়ের জন্য গরম কাপড় কিনতে এসেছেন। দরাদরি করে ৫০০ টাকায় দু’টি গরম কাপড়ের গেঞ্জি সেট কিনেছেন। এ সময় দোকানি তাকে বলেন, শীত পড়লে এ কাপড়ই হাজার টাকায় বিক্রি হবে। আগাম কেনায় তিনি জিতেছেন।
এদিকে শীতের কাপড়ের মার্কেটের পাশাপাশি শহরের খোকন পার্ক এলাকায় কম্বলের দোকানেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে।