স্মরণীয়-বরণীয়

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের নির্ভীক বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। বাঘা যতীন ছিলেন বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের প্রধান নেতা। খালি হাতে বাঘ শিকারের জন্য তার নামের সঙ্গে বাঘা যুক্ত হয়। বাঘা যতীন ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঝিনাইদহ জেলায় পৈতৃক বাড়িতে তার ছেলেবেলা কাটে। এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাসের পর তিনি সাঁটলিপি ও টাইপ শেখেন এবং বেঙ্গল গভর্নমেন্টের স্টেনোগ্রাফার পদে নিযুক্ত হন। কিশোর বয়স থেকে তিনি পরোপকার, সত্যনিষ্ঠা, নির্ভীক চিন্তা ও কর্মে অভ্যন্ত ছিলেন। তিনি একজন আন্তরিক, সৎ, অনুগত এবং পরিশ্রমী কর্মচারী হিসেবে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেন। একই সঙ্গে তার মধ্যে দৃঢ় আত্মমর্যাদা ও জাতীয়তাবোধ জন্মেছিল। ১৯০৩ সালে যতীন গোপনে বিপ্লবী দল অনুশীলন সমিতির সঙ্গে জড়িত হন। ১৯০০ সাল থেকে তিনি নিজ জেলায় যুগান্তরের শাখা তৈরি করেন। ১৯০৮ সালে যতীনসহ কয়েকজন বিপ্লবীকে আলীপুর ষড়যন্ত্র মামলায় জড়ানো হয়। মামলায় যতীন অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। পরে তিনি আত্মগোপন করে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে যতীন আবারও হাওড়া-শিবপুর ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হন। এবার তার সঙ্গে অন্যান্য যারা গ্রেপ্তার হন, তাদের ‘যতীন গ্যাং’ নামে অভিহিত করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে যতীন এ মামলা থেকে মুক্তি পেলেও তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। জেলে থাকা অবস্থায় যতীন এবং নরেন সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তারা বাংলা, উত্তর ভারতসহ বিভিন্ন এলাকার বিপ্লবীদের সংগঠিত করেন। এই দলগুলো যতীন মুখোপাধ্যায় ও রাসবিহারি বসুকে নেতা মনোনীত করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপে অবস্থানরত ভারতীয় বিপ্লবীরা ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেনস পার্টি গঠনের উদ্দেশ্যে বার্লিনে সমবেত হন এবং জার্মানির সাহায্য কামনা করলে জার্মান সরকার সম্মত হয়। যতীনকে বিপ্লবী দলগুলোর কমান্ডার ইন চিফ করা হয়। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক গুলি বিনিময়কালে বাঘা যতীন মৃত্যুবরণ করেন। কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০