নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগে আলোচিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির বিরুদ্ধে এক ক্রেতার করা মামলায় অভিনয়শিল্পী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়া হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। গতকাল রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দুই আবেদনই জমা দেয়া হয়। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আতোয়ার রহমানের বেঞ্চে আজ একটি আবেদনের শুনানি হতে পারে।
মিথিলার আইনজীবী নিয়াজ মোরশেদ জানান, তার আবেদনটি আজ সোমবার বেঞ্চে উঠতে পারে। তবে ফারিয়ার আবেদনের শুনানির তারিখ জানা যায়নি।
সাদ স্যাম রহমান নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ইভ্যালির এক গ্রাহক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ৪ ডিসেম্বর ঢাকার ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন। মামলার ৯ আসামির মধ্যে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল, তার স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও গায়ক তাহসান খানেরও নাম রয়েছে।
বাদীর অভিযোগÑআসামিরা ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ তার কাছ থেকে তিন লাখ ১৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তখন ইভ্যালির সঙ্গে যুক্ত তাহসান, মিথিলা ও ফারিয়ার উপস্থিতি ও তাদের ‘প্রমোশনাল’ কথাবার্তায় প্রলুব্ধ হয়ে তিনি পণ্যের অর্ডার করেছিলেন।
কিন্তু ফারিয়ার আইনজীবী জেসমিন সুলতানা বলেন, ‘এটি ভুয়া মামলা। কারণ টাকা-পয়সার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতাই ছিল না। বাদী অপরাধের তারিখ দেখিয়েছেন চলতি বছরের ২ মে। ফারিয়া ইভ্যালিতে যোগ দিয়েছিলেন ১ জুন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফারিয়ার নামে মামলাটি চলে না।
ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হওয়ার পর শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ থাকা অভিনেত্রী মিথিলাও চুক্তি বাতিলের খবর দিয়েছিলেন। আর ওই ই-কমার্স কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা শবনম ফারিয়া চাকরি ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন।
গাড়ি, মোটরসাইকেল, গৃহস্থালির আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন বিলাসী পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের নজরে এসেছিল ইভ্যালি। তাদের চটকদার ‘অফারের’ প্রলোভনে অনেকেই বিপুল অঙ্কের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন, পরে বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করার আশায়।
কিন্তু তাদের অনেকে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পণ্য বুঝে পাননি, ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেয়া তাদের টাকাও ফেরত দেয়নি। এভাবে প্রলোভনে পড়ে ব্যাংকঋণ, ধার-দেনা করে, জমি বা গহনা বেচে সেই টাকা ইভ্যালিতে লগ্নি করে এখন মহাবিপদে আছেন বহু গ্রাহক।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে ইতোমধ্যে গ্রাহকের করা প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধানমন্ডির নতুন মামলাতেও তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
