১২ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের টিকা দেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। তবে শিশুর টিকা নিয়ে অনেক মা-বাবা দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন। অনেকে আবার মনে করছেন, কভিডের প্রকোপ যেহেতু কমে গেছে, কাজেই টিকা দেয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বড়দের মতো শিশুদেরও কভিডের টিকা দেয়া জরুরি।
কেন প্রয়োজন: সারা বিশ্বে কভিড পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। ব্যাপকহারে টিকা দেয়ার কারণেই এ উন্নতি। তা ছাড়া টিকা নিলে কভিডের জটিলতাও অনেক কমে যায়, কমে মৃত্যুর ঝুঁকিও। এদিকে আমাদের দেশের মোট জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশই শিশু। কাজেই শিশুদের বাদ দিয়ে কভিড পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা বাস্তবসম্মত নয়। তার ওপর স্কুলপড়–য়া শিশুরা বিদ্যালয়ে ফিরেছে। কাজেই সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানোসহ সার্বিক বিবেচনায় শিশুদের টিকা দেয়া জরুরি।
টিকার প্রস্তুতি: টিকার নিবন্ধনের জন্য শিশুর জš§নিবন্ধন থাকা প্রয়োজন। নির্দিষ্ট দিনে নিবন্ধনের প্রিন্টকপিসহ উপস্থিত হতে হবে। শিশুকে টিকা দেয়ার পরপরই বাসায় চলে যাবেন না। কমপক্ষে এক ঘণ্টা টিকাকেন্দ্রে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ দিতে হবে তাকে। শিশুকে টিকা দেয়ার পর অযথা ঘোরাঘুরি না করে তাকে বাসায় নিয়ে যাবেন।
টিকা নিতে পারবে যেসব শিশু: তীব্র অসুস্থতা না থাকলে ১২ বছরের বেশি বয়সী সব শিশুই কভিডের টিকা নিতে পারবে। গুরুতর অসুস্থ, টিকা দেয়ার সময় জ্বর, কাশি বা অন্য অসুস্থতা থাকলে ওই সময় টিকা না দেয়াই ভালো। পরে সুস্থ হয়ে টিকা নিতে পারবে। কোনো শিশুর কেমোথেরাপি চললে বা অন্য কোনো রোগে স্টেরয়েড বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়, এমন ওষুধ চললে টিকা নেয়া উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: সব টিকারই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। শিশুকে ছোটবেলায় টিকা দেয়ার পর যেমন জ্বর বা সামান্য অসুবিধা হয়েছে, কভিড টিকায়ও তেমন সামান্য অসুবিধা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জ্বর ছাড়াও টিকার স্থানে সামান্য ব্যথা হতে পারে, জায়গাটা ফুলে যেতে পারে, সামান্য চুলকানিও হতে পারে কারও কারও। মাথাব্যথা, বমি-বমি ভাব, হাত-পা ব্যথা প্রভৃতি সমস্যাও হতে পারে। এগুলোতে সাধারণত কোনো ওষুধ লাগে না। দুই-তিন দিনের মধ্যে নিজে থেকে এসব ভালো হয়ে যায়। জ্বর হলে প্যারাসিটামল, চুলকানি হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হতে পারে।
ডা. আবু সাঈদ
কনসালট্যান্ট
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
