সারের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে থাকবেন ভ্রাম্যমাণ আদালত: কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী ১৫ দিন উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার কথা জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সার পরিস্থিতি নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় ও সার ডিলারদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান তিনি। 

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৫ দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশের সহযোগিতায় ১৫ দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিসেম্বর থেকে জুলাই পর্যন্ত ইউরিয়া ব্যবহারের লক্ষ্য ২৬ লাখ টন। জুলাই মাসে আমাদের মজুত ছিল সাত লাখ ৬৯ হাজার টন। বর্তমানে মজুত আছে আট লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন, গতবছর যা ছিল ৯ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন। এবছর সারের মজুত গত কয়েক বছরের

তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম। এটা আমাদের বোরো মৌসুম। এ সময়েই সারের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। আমরা সতর্ক ছিলাম এবং আছি। মজুত পরিস্থিতিতে মোটেই বিপর্যয় ঘটেনি। আমরা যেভাবে প্ল্যান করেছিলাম সেভাবেই এগোচ্ছি।’

বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি কামরুল আশরাফ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় কৃষিমন্ত্রী জানান, দেশে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) সারের চাহিদা সাত লাখ ৫০ হাজার টন নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে মজুত এক লাখ ৯২ হাজার টন। ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টন, মজুত আছে পাঁচ লাখ ৯৬ হাজার টন। এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সারের চাহিদা সাত লাখ ৫০ হাজার টন এবং মজুত আছে তিন লাখ ১২ হাজার টন।

তিনি বলেন, পাইপলাইনে সরকারি ও বেসরকারি খাতে যে সার রয়েছে, তাতে কম হওয়ার কোনো কারণ নেই। সার পরিবহন নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল, এটা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। রেলওয়ের সঙ্গে আমরা একটি সমঝোতায় গিয়েছি, তাতে মনে হয় না পরিবহনে কোনো সমস্যা হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘পাইপলাইনে আমাদের টিএসপি আছে এক লাখ ৫০ হাজার টন, ডিএপি তিন লাখ ৩০ হাজার টন ও এমওপি দুই লাখ ২০ হাজার টন। আমি এটুকু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে চাই, মজুতে সমস্যা নেই। পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে। পাইপলাইনে যেটা রয়েছে, আগামী জুলাই পর্যন্ত পর্যাপ্ত সারের মজুত থাকবে এবং বেশিই থাকবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের একদম ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা যেন সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করেন। যেসব ডিলার ও বিক্রেতা বেশি দামে সার বিক্রি করবেন, তাদের তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা চিঠি দিয়ে ডিসি-এসপির সহযোগিতা নিয়ে অব্যাহতভাবে ১৫ দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব। অসাধু ডিলার ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে যে, অনেক এলাকায় চাষিরা সার পাচ্ছেন না, প্রয়োজনীয় সারের ঘাটতি রয়েছে। সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি জানেন এবং আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে।’

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, আমাদের কৃষকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পর্যাপ্ত সার মজুত আছে। অপপ্রচার বিভিন্নভাবে ছড়াচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি এগুলো তাৎক্ষণিক সমাধান করতে। আমরা এজন্যই আজ বসেছি, যাতে সার নিয়ে আগের মতো কোনো ধরনের সংকট তৈরি না হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০