ফসলের মাঠে মুজিব পরিবারের প্রতিচ্ছবি গড়েছেন আব্দুল কাদির

রবিউল আউয়াল রবি, ময়মনসিংহ: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করতে নিজের চাষ করা ফসলের মাঠে সরিষা, লাল শাক ও পালং শাক দিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও পুত্র সজিব ওয়াজেদের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলেছেন আব্দুল কাদির নামে এক কৃষক।

এছাড়াও ফুটিয়ে তুলেছেন নৌকাসহ পদ্মাসেতুর প্রতিচ্ছবিও ৷ ফসলী জমিতে একজন কৃষকের এমন চিত্রকর্ম দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন উৎসুকজনতা।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পাড়া খালবলা গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে কৃষক আব্দুল কাদির। জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করতেই তিনি ফসলের মাঠে শেখ পরিবারের এমন প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন বলে শেয়ার বিজকে জানান।

সরেজমিন আব্দুল কাদিরের ফসলের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক আব্দুল কাদিরসহ কয়েকজন ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন করতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। সৌন্দর্য্যময় এই ফসলের মাঠ দেখতে ভিড় করছে নানা বয়সের মানুষ। কেউ মোবাইলে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। আবার কেউ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছেন চিত্রকর্মগুলোর দিকে।

স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামে পাড়া খালবলা বন্ধু মহল নামে একটি ক্লাব রয়েছে। ক্লাবের সদস্যদের সমন্বয়ে ৩৩ শতক জমিতে কৃষক আব্দুল কাদির পরম ভালোবাসায় চিত্রকর্মটি ফুটিয়ে তুলেছেন। এর আগে ২০১৯ সালে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসায় ফসলের মাঠকে ‘ভালোবাসার জমিন’ বানিয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০২০ সালে স্মৃতিসৌধ, নৌকা, শাপলা ও মুজিব শতবর্ষও এঁকেছেন এই ব্যতিক্রম কৃষক আবদুল কাদির।

ফসলী জমিতে কৃষকের এমন চিত্রকর্ম দেখতে আসা ফয়জুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘লোকমুখে শুনেছিলাম ফসলের মাঠে শেখ পরিবারের ছবি আঁকা হয়েছে। কিন্তু এখন নিজের চোঁখে মনোমুগ্ধকর এমন সুন্দর দৃশ্য অবলোকন করতে পেরে আমি বিস্মিত। চরম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নিঃস্বার্থভাবে আঁকা এই চিত্রকর্মে।’

আরিফুল হক নামে আরেকজন দর্শনার্থী বলেন, ‘নেত্রকোনা থেকে কয়েকজন বন্ধু মিলে ময়মনসিংহে ঘুরতে এসেছিলাম। পথিমধ্যে ফেসবুকে ফসলের জমিতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ছবি আঁকা হয়েছে জানতে পেরে এখানে এসেছি। কৃষক আর বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রতিচ্ছবি মোবাইলে তুলে বাসায় যাচ্ছি। নিজের চোঁখে দেখে অন্যরকম আনন্দ পেয়েছি।’

আশিকুর রহমান নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘কৃষক আব্দুল কাদির সারাদিন এই ফসলের মাঠেই কাজ করেন। ঘাসগুলো একটু বড় হলেই তার ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আগাছাগুলো দ্রুত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। তার এমন চিত্রকর্মে আমরা গর্বিত।’

পাড়া খালবলা বন্ধু মহল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্যেই আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারছি। মূলত বঙ্গবন্ধুর চেতনা আগামী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এটি করা হয়েছে। ’

চিত্রকর্ম প্রসঙ্গে কৃষক আব্দুল কাদির শেয়ার বিজকে বলেন, ‘মূলত বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ করার জন্যই আমার এই চিত্রকর্ম। বছরের অন্য সময় জমি চাষ করে আর্থিক লাভবান হই। কিন্তু এ সময়টায় জাতির পিতার চেতনা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই আমার এই চিত্রকর্ম করা। এটি করে ফসল দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়না। তবে, নিজে মানসিক তৃপ্তি পাই।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজা ইয়াসমিন শেয়ার বিজকে বলেন, কৃষক আব্দুল কাদির বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এছাড়া কৃষক আব্দুল কাদিরকে সরকারিভাবে সবধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০