আমরা নেটওয়ার্কসের আইপিও বিনিয়োগকারীরা শেয়ার পাবেন ৩৫ টাকায়

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ছাড়ার অনুমোদন পেয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড। গতকাল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬০৬তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

কোম্পানিটি এই পদ্ধতিতে এক কোটি ৫০ লাখ ৪১ হাজার ২০৯টি শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ৫৬ কোটি ২৫ লাখ ৭ টাকা তুলবে বলে বিএসইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এই শেয়ারের মধ্যে ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৭৮৬টি শেয়ার পাবেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা; যা মোট শেয়ারের ৪০ শতাংশ। ৩৫ টাকা দরে এই শেয়ার বিক্রি হবে। এর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২১ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৫১০ টাকা সংগ্রহ করা হবে।

আর বাকি ৬০ শতাংশ বা ৯০ লাখ ১৪ হাজার ৪২৩টি শেয়ার পাবেন মিউচুয়ালসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। ৩৯ টাকা দরে এই শেয়ার বিক্রি হবে। এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৭ টাকা।

উত্তোলিত টাকা দিয়ে কোম্পানির বিএমআরই (আধুনিকায়ন), ডাটা সেন্টার প্রতিষ্ঠা, দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াই-ফাই হটস্পট প্রতিষ্ঠা করা, ঋণ পরিশোধ ও আইপিওর খরচ মেটানো হবে।

৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত বিররণী অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ৩ টাকা ১৬ পয়সা; শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ২১ টাকা ৯৮ পয়সা। আর ৫ বছরের ইপিএসের গড় করলে হয় দুই টাকা ৫২ পয়সা। ৩০ জুন, ২০১৬ সমাপ্ত নিরীক্ষিত হিসাব (ছয় মাসের) অনুযায়ী কোম্পানিটির ইপিএস এক টাকা ৬৮ পয়সা; আর এনএভি ২৩ টাকা ৬৬ পয়সা।

জানা গেছে, ৭২ ঘণ্টার বিডিংয়ে ২৭২ জন যোগ্য বিনিয়োগকারী আমরা নেটওয়ার্কের শেয়ার কিনতে নিলামে অংশগ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে তারা সম্মিলিতভাবে ৬৯৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার কিনতে চেয়েছেন। তবে বিডিংয়ে ৩৫ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার ইস্যু করা হবে। এক্ষেত্রে বিডারদের মধ্যে আনুপাতিক হারে শেয়ার ইস্যু করা হবে।

এর আগে আমরা নেটওয়ার্কের বিডিং নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। অনেকে এটাকে সাজানো নাটক বলে অভিযোগ করেছেন। তারা বলন, নিজেদের লোক দিয়েই তারা শেয়ারের দর বাড়ানোর জন্য কৌশল অবলস্বন করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির বিডিং বাতিলের দাবিও করেছেন তারা।

সম্প্রতি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিডিং বাতিল চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বরাবর আবেদন করে। এজন্য সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি বিএসইসিতে জমা দেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর নির্ধারণ হয়েছে ৩৯ টাকা। সংশ্লিষ্টদের মতে, যে দর নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। বর্তমানে বাজারে এ খাতের সাতটি কোম্পানি রয়েছে। যার মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর ২৪ টাকা থেকে ৩২ টাকার মধ্যে। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ওঠানামা করছে ৩৯ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত রয়েছে তারা বিনিয়োগকারীদের কাছে আস্থা বা বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করেছে। অন্যদিকে একটা নতুন কোম্পানি যার সম্পর্কে বিনিয়োগকারীরা কিছুই জানেন না, সেই কোম্পানি শেয়ারদর উচ্চমূল্য বা অস্বাভাবিক হতে পারে না। তাদের মতে, এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কিছুতেই ৩৯ টাকা হতে পারে না।

উল্লেখ, বর্তমানে  আইপিও’র দুই ধরনের পদ্ধতি আছে। একটি ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতি, অন্যটি হচ্ছে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি। ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি নিজেই শেয়ারের দর প্রস্তাব করে। ওই দর যৌক্তিক মনে করলে অন্যান্য শর্তপূরণসাপেক্ষে কোম্পানির আইপিও অনুমোদন করা হয়। অন্যদিকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অশংগ্রহণে শেয়ারের মূল্য নির্ধারিত হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০