সূচকের সামান্য উত্থান

ক্রয় চাপ কমায় লেনদেন হ্রাস ও দরপতন পুঁজিবাজারে

মো. আসাদুজ্জামান নূর: বছরের শুরুর তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে উত্থান দেখা গেল। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার শেয়ার কেনায় আগ্রহ কম দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের। আগের দিনের তুলনায় কমেছে ক্রয় চাপও, যার কারণে সূচক সামান্য বাড়লেও লেনদেন প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। শেয়ারদর হ্রাস পেয়েছে বেশিরভাগ সিকিউরিটিজের।

পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই দিন কভিড শনাক্তের হার বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের নতুন করে বিনিয়োগ বাড়াতে দ্বিধান্বিত করছে। ফলে কোনোরকমে সূচকের ১০ পয়েন্ট উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে।

লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমলে গত ১২ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো টানা দুই দিন এক হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেছে। গতকাল লেনদেন দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৮২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল এক হাজার ৩১৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

লেনদেনে সবার ওপরে ছিল বিবিধ খাত। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। এরপর ছিল বিমা, বস্ত্র, জীবন বিমা, ব্যাংক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, প্রকৌশল খাত প্রভৃতি।

গতকাল বিবিধ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। এ খাতের ৪৬ শতাংশ করে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ও কমেছে। এছাড়া মাত্র একটি কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৭৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। আর কমেছে ২৫ শতাংশ কোম্পানির। খাতটি লেনদেনে অবদান রেখেছে ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ।

লেনদেনে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে ছিল বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসে সাধারণ বিমা খাত। এ খাতের ৭৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। কমেছে ২০ শতাংশের ও অপরিবর্তিত ছিল মাত্র একটির। 

সাত দশমিক ৬৪ শতাংশ অবদান রেখে লেনদেনের চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। তবে এ খাতের ৬২ শতাংশ কোম্পানির দরপতন ঘটেছে। বিপরীতে দর বেড়েছে ৩৩ শতাংশ কোম্পানির ও বাকিগুলোর অপরিবর্তিত ছিল।

আর জীবন বিমা খাতের শতভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে। খাতটি লেনদেনে অবদান রাখে ছয় দশমিক ৭৯ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের ২৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এছাড়া প্রকৌশল খাতের ৪২ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৩৪ শতাংশ ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ২৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।

নতুন বছরের প্রথম তিন কার্যদিবস ও আগের বছরের শেষ দিনেও সূচক বাড়ায় টানা চার দিন ইতিবাচক থেকেছে সূচক। এ উত্থানের ঘটনাটি ঘটেছে গত ৭ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর প্রথমবারের মতো। এ নিয়ে গত আট কার্যদিবসে সূচক বাড়ল সাত দিন। মাঝে এক দিন কমেছিল ৯ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে আট দিনে বাড়ল ২৬৩ পয়েন্ট।

গতকাল বাজার ইতিবাচক থাকলেও দিনভর ছিল উত্থান-পতনের মধ্যে। আগের দুই দিনে ১২৫ পয়েন্ট উত্থানের স্মৃতি নিয়ে এ লেনদেন শুরুর পর ৪০ মিনিটে সূচক পড়ে যায় ২৯ পয়েন্ট। শেষ পর্যন্ত ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সে ১০ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট যোগ হয়ে শেষ হয় লেনদেন।

সূচকে পয়েন্ট যোগ হলেও বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। গতকাল লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ১৬৭টির দর, কমেছে ১৮০টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির।

গতকাল সূচক বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল লাফার্জহোলসিমের। কোম্পানিটির শেয়ারদর তিন দশমিক ০৬ শতাংশ বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে দুই দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। গ্রামীণফোন, ওরিয়ন ফার্মা, রেনেটা, পাওয়ার গ্রিড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, রবি, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, একমি ল্যাবরেটরিজ ও এসিআইয়ের দরবৃদ্ধিতে সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে এ ১০টি কোম্পানি মিলে সূচক বাড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ পয়েন্ট। বিপরীতে বেক্সিমকোসহ ১০টি কোম্পানি মিলে সূচক কমিয়েছে ১০ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০