হাতিরঝিল-ডেমরা এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়ন হবে পিপিপিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: হাতিরঝিল-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ককে চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে উন্নীত করবে সরকার। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) ভিত্তিক প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। হাতিরঝিল থেকে ডেমরা পর্যন্ত এখনকার রুটটি ১৬ দশমিক পাঁচ কিলোমিটারের। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে তা ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটারে নেমে আসবে। আর এক ঘণ্টার পরিবর্তে এর এক মাথা থেকে আরেক মাথায় পৌঁছাতে সময় লাগবে ১০ মিনিট। তবে এটি ব্যবহারের জন্য ২১ বছর টোল দিতে হবে। যানবাহন প্রতি কী পরিমাণে টোল দিতে হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) ও চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিসি) সঙ্গে চুক্তি সই করে পিপিপি কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের আওতায় দুটি সেতু, চারটি ইন্টারসেকশন, দুটি কালভার্ট, একটি ওভারপাস, ফুটওভারব্রিজ ও টোল প্লাজা নির্মাণ করা হবে। চার বছর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকল্পিত উড়ালসড়কটি চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ঢাকার কেন্দ্রে আসার বিকল্প প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি এটি যানজট কমাতেও সহযোগিতা করবে।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুলতানা আফরোজ বলেন, ‘বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে সড়ক খাতে গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর হলো। দেশের উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ এক্সপ্রেসওয়ে। আমরা জানি, সরকারের বাজেটে নানা ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। পাশাপাশি পিপিপি মডেলেও আমরা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। সওজ এ মুহূর্তে ছয়টি পিপিপি প্রকল্পে কাজ করছে। এর মধ্যে ঢাকা বাইপাস রোডকে চার লেন এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে। বাকি প্রকল্পগুলো প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে রয়েছে। তার মধ্যে এটা অন্যতম প্রকল্প।’

পিপিপি প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পিপিপি প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুবই কম। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমরা কাজ করি। অনেক দিন পড়ে থাকলেও আজকে চুক্তিসই করলাম।’

এ প্রকল্পে চায়না কমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের কনসোর্টিয়াম দুই হাজার ৯৪ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার এক হাজার ২০৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট, এ দুটি জাতীয় মহাসড়ক ঢাকার সঙ্গে দেশের প্রধান দুটি শহরকে যুক্ত করেছে। তবে ব্যস্ততম এই দুটি মহাসড়কের প্রবেশ ও বহির্গমন পয়েন্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায়।

মহাসড়ক ধরে যানবাহন ঢাকায় ঢোকার পর তা সড়কে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে। এতে করে প্রায়ই শহরের দক্ষিণ অংশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। তাই ঢাকার যানজট কমাতে ও শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বিকল্প প্রবেশদ্বারের জন্য বিদ্যমান হাতিরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী-শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা রুটটিকে এক্সপ্রেসওয়েতে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিমরাইল এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে, যেখানে মহাসড়কে যান চলাচল নিরবচ্ছিন্ন রাখতে একটি বহুস্তর বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সড়ক অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রওশন আরা মান্নান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০