চলতি বছরেই চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের মধ্যেই চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ দেখা যাবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘শিগগিরই’ এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক ‘মিলনমেলায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। মন্ত্রীর বক্তব্যের আগে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়া উদ্দিন বলেন, সমিতির সদস্যদের প্রাণের দাবি চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ। আমরা এ বিষয়ে আপনার সদয় প্রয়াস চাই।

আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা বলেছেন সার্কিট বেঞ্চের কথা। আমি আপনাদের একটা সুখবর দিই। সেটা হচ্ছে, বর্তমানে নতুন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আমার এ সার্কিট বেঞ্চের ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। তিনি শিগগিরই এটা বিবেচনায় নেবেন। আমার মনে হয়, এ বছর শেষ হওয়ার আগেই আমরা হয়তো একটা সার্কিট বেঞ্চ চট্টগ্রামে দেখব। আমার ওপর আস্থা রাখতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীও এটা চান। প্রধান বিচারপতি আমাকে বলেছেন। এ ব্যাপারে হয়তো কিছু দিনের মধ্যে একটা ঘোষণা আমরা করব।

১৯৮৯ সালে চট্টগ্রামের আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে দেশের দ্বিতীয় প্রধান এ নগরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ‘হাইকোর্ট সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ প্রায় ৩৩ বছর ধরে এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নতুন আদালত ভবন উদ্বোধন করে এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে যত দ্রুত সম্ভব হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ‘হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছিলেন, চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে ‘কিছু সাংবিধানিক সমস্যা’ আছে। এরপর ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর সিলেট আইনজীবী সমিতির নৈশভোজে বিচারপতি সিনহা চট্টগ্রাম ও সিলেটে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের কথা বলেছিলেন। ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যেও ‘ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের বেঞ্চ হলে তা চট্টগ্রামেই হবে’ বলে আশ্বস্ত করেন বিচারপতি সিনহা। এরপর বিষয়টি আর এগোয়নি। চার বছর পর শনিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইনজীবীদের আবার আশার কথা শোনালেন। 

১৯৮২ সালের ১১ মে চট্টগ্রামে হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। এইচএম এরশাদের সামরিক শাসনামলে ১৯৮৬ সালের ১৭ জুন সামরিক ফরমানের ৪ (এ) ধারা সংশোধন করে স্থায়ী বেঞ্চকে সার্কিট বেঞ্চ (অস্থায়ী) করা হয়।

১৯৮৬ সালে সংবিধান পুনরুজ্জীবনের পর সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ অনুসারে সার্কিট বেঞ্চের বিধান থাকায় চট্টগ্রামসহ দেশের ছয়টি সার্কিট বেঞ্চ বহাল থাকে। পরে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ছয়টি সার্কিট বেঞ্চই আবার স্থায়ী বেঞ্চের মর্যাদা পায়।

১৯৮৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ-সংক্রান্ত অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদটি বাতিলের আদেশ দিলে চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেটের হাইকোর্ট বেঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে নেয়া হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০