শঙ্কা কাটিয়ে ক্রয় প্রবণতায় সূচক দেড় মাসে সর্বোচ্চ

মো. আসাদুজ্জামান নূর: দেশের পুঁজিবাজারে গতকাল সোমবারও ইতিবাচক ধারায় লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। বছরের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক ছিল ছয় হাজার ৮৫৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে ১২ কার্যদিবসে সূচকে ২০০ পয়েন্ট যোগ হয়ে গতকাল দেড় মাসে সর্বোচ্চ অবস্থানে ফিরেছে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। এছাড়া টাকার অঙ্কেও লেনদেন বেড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কভিডের তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা উড়িয়ে শেয়ার কেনায় আগ্রহী হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। দিনভর ক্রেতাদের আধিপত্যে দেখা গেছে, যা দর বাড়িয়েছে সিংহভাগ সিকিউরিটিজের। ফলে ইতিবাচক থেকে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে পুঁজিবাজারে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন এক হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত পুঁজিবাজারের লেনদেন একবারও হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেনি। তবে ৩ জানুয়ারি থেকে হাজার কোটি টাকার লেনদেনের যাত্রা এখনও অব্যাহত। এ সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ১১ জানুয়ারি, এক হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা।

গতকালের লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বিবিধ খাত। এ খাতে ১৫ দশমিক ০৫ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এছাড়া লেনদেনে অবদান রাখা শীর্ষ খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন ১১ দশমিক ৩৯ শতাংশ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, বস্ত্র আট দশমিক ৫২ শতাংশ, প্রকৌশল আট দশমিক ৪৪ শতাংশ, জীবন বিমা সাত দশমিক ১২ শতাংশ এবং সেবা ও রিয়েল এস্টেট খাতে সাত দশমিক ০৭ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতগুলোর লেনদেন সাত শতাংশের নিচে ছিল।

সপ্তাহের শুরুতে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর উত্থানে আটকে ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। সেখান থেকে এক দিনের ব্যবধানে আবারও আগ্রহের নতুন খাত পেয়েছেন তারা। সোমবার লেনদেনে জীবন বিমা খাতের কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ারদর বেড়েছে। পাশাপাশি সাধারণ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর প্রতিও ছিল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ।

লেনদেনে সাধারণ বিমা খাতের ৯৭ দশমিক ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। আর জীবন বিমা খাতের ৭৬ দশমিক ৯২ শতাংশ দর বেড়েছে। এছাড়া ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৬১ শতাংশ, নন-ব্যাংক আর্থিক খাতের ৬৮ শতাংশ, ব্যাংকের ৫৯ শতাংশ এবং প্রকৌশল খাতের ৩৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।

সোমবার লেনদেনের শুরুতেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনার বেশ উচ্ছ্বাস লক্ষ করা গেছে। ফলে সূচকের উত্থান-পতনের যে বড় ঢেউ দেখা যেত, সেটি ছিল না বললেই চলে। খানিক সময়ের জন্য সূচকের পতন ও উত্থানের হার কমে এলেও পরবর্তী সময়ে আবার সেটি শেয়ার কেনার আগ্রহে উঠে এসেছে। দিন শেষে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৫ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৫৫ পয়েন্টে। এর আগে ২১ নভেম্বর সূচক ছিল সাত হাজার ৮৫ পয়েন্টে। এছাড়া অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ৩ ও ডিএস৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়েছে।

গতকাল সূচক উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল টেলিকম খাতের রবির। শেয়ারদর ৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ উত্থানে সূচক বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট। এছাড়া বেক্সিমকোর শেয়ারদর দুই শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট। শিপিং করপোরেশনের শেয়ারের দর বৃদ্ধি সূচক উত্থানে ভূমিকা রেখেছে ৪ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট। ওরিয়ন ফার্মার অবদান ছিল ৩ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট। বিএসআরএমের শেয়ারদর বেড়েছে ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ, এতে সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ২৮ পয়েন্ট। লাফার্জহোলসিমের শেয়ারদর বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট। এছাড়া সাইফ পাওয়ারের ২ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট, বার্জার পেইন্টের ২ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট ও ডরিন পাওয়ারের ১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট অবদান ছিল সূচক বৃদ্ধিতে।

পাশাপাশি শেয়ারদর কমায় সূচক পতন ত্বরান্বিত করেছে তিতাস গ্যাস, আরএকে সিরামিক, আইসিবি, পাওয়ার গ্রিড, ওয়ালটন, বিএটিবিসি, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ব্র্যাক ব্যাংক ও ডেল্টা লাইফ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০