ফরিদপুরে সরকারি জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ

কে এম রুবেল, ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদার মোড় থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, শিগগিরই অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সম্প্রতি ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

ওই লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলাধীন ওয়াপদার মোড় থেকে প–রাতন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে প্রভাবশালীরা পাকা ঘর নির্মাণ করছে। সড়ক ও জনপথের জায়গা ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে এলাকায় বসবাসরত মানুষের জনজীবন মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি করছে।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বারবার মৌখিকভাবে জানানোর পরেও অদৃশ্য কারণে সড়ক ও জনপথের জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করার কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।

গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বোয়ালমারী ওয়াপদা মোড়ে সরকারি জায়গায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গার একাংশ দখলে নিয়ে আরসিসি পিলার করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন আমেনা খাতুন নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান মৃধা পিকুল জানান, এসএ ১২০৪ দাগে জমি ছিল ২০ শতাংশ। ওই জমির মধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৭, আবজাল হোসেনের ৮, আমার (পিকুল মৃধার) ২ এবং আমেনা খাতুনের ৩ শতাংশ জমি ছিল। কিন্তু রেকর্ডের পর বিএস ৪২০৬ দাগে জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, এখানে অন্যদের জমির পরিমাণ ঠিক থাকলেও আমেনা খাতুনের জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি কমে হয়েছে দুই দশমিক ৭৫ শতাংশ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের চার দশমিক ২৫ শতাংশ জমি আমেনা খাতুনের নামে অবৈধভাবে রেকর্ড করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সড়ক বিভাগের সার্ভেয়ার শামিম আহমেদ জানান, এ বিষয়ে আমরা সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি, একটি দেওয়ানি মামলা রুজুর জন্য। দ্রুত মামলাটি হলে, অবৈধ দখলদারদের কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে।

আমেনা খাতুনের এক ছেলে আজিজুল হক বোয়ালমারী পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর। অপর ছেলে আতিকুল হক পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর। সরকারি জায়গা দখলে নেওয়া বোয়ালমারী পৌর কাউন্সিলর আজিজুল হক এ বিষয়ে বলেন, সরকারি জায়গা কমেনি, সঠিকভাবে মাপ হলে ১২০৪ দাগের জমির মালিকরা ঠিকভাবে বুঝে পাবে। আমি কেন সরকারি জায়গা দখল করব।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওয়াপদা মোড় থেকে চৌরাস্তার দিকে একটু এগিয়ে হাতের ডানপাশে আল নূর চক্ষু হাসপাতালের পাশে সরকারি জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে পৌরসভার আবর্জনা দিয়ে। আল নূর চক্ষু হাসপাতালের সামনেও জলাশয় ভরাট করে ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণ করেছে ওই চক্ষু হাসপাতালটি। এর একটু সামনে চৌরাস্তা বাসস্টপেজ-সংলগ্ন স্থানে বালু দিয়ে জলাশয় ভরাট করে প্রশস্ত জায়গায় ইট বিছানোর কাজ চলছে। এভাবে জলাশয় ভরাটের ফলে ওই অঞ্চলে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া চৌরাস্তার দক্ষিণ পাশে আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, ছিদ্দিকুর রহমান বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন সড়ক ও জনপথের জায়গার একাংশ দখলে নিয়ে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান বলেন, বিষয়টি আমরা অবহিত আছি। শিগগিরই এ ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেব। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। তিনি ম্যাজিস্ট্রেট দিলেই আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করব।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০