প্রথমবারের মতো ই-ট্রাক্টর রপ্তানি করছে ভারত, গন্তব্য মেক্সিকো

শেয়ার বিজ ডেস্ক: উত্তর আমেরিকার বাজার ধরতে ইলেকট্রনিক ট্রাক্টর বা ই-ট্রাক্টর রপ্তানিতে চুক্তি করল ভারতের গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেলেস্টিয়াল ই-মোবিলিটি। খবর: এনডিটিভি।

কৃষিক্ষেত্রসহ পণ্য পরিবহনে নতুন দিগন্ত উšে§াচন করতে পারে বিকল্প শক্তিচালিত যানবাহন। পরিবেশবান্ধব এসব যানবাহনের রক্ষণাবেক্ষণ তুলনামুলক সহজ। এছাড়া ব্যবহারের খরচও কম। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইলেকট্রিক ট্রাক্টর জনপ্রিয় হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে ভারতও ইলেকট্রিক ভেহিকেল (ইভি) উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা করে। চলতি বছর ইভি রপ্তানিও শুরু করতে যাচ্ছে দেশটি।

২০২০ সালে মার্চে ভারতে প্রথম ই-ট্রাক্টর উৎপাদন করে হায়দরাবাদের প্রতিষ্ঠান সেলেস্টিয়াল ই-মোবিলিটি। পুনঃচার্জযোগ্য ব্যাটারিচালিত সেই ই-ট্রাক্টর নিয়ে বিদেশের বাজার ধরতে উদ্যোগী হলো তারা। শিগগির মেক্সিকোয় বিদ্যুৎচালিত ট্রাক্টর রপ্তানি করবে প্রতিষ্ঠানটি।

মেক্সিকোর গ্রুপো মার্ভেলসার সঙ্গে বিপণন, বিক্রি, ও বণ্টনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে সেলিস্টিয়াল। মার্ভেলসা দুই হাজার ৫০০ ডিলার ও ৮০০ অনুমোদিত পরিষেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে মেক্সিকোর বাজারে ভারতের ই-ট্রাক্টর বিক্রি করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। আগামী তিন বছরে কৃষিপ্রধান দেশটিতে চার হাজার ই-ট্রাক্টর বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সেলেস্টিয়াল। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ভারতের বাজারে এক হাজার ৮০০ প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাক্টর বিক্রির ক্রয়াদেশ পেয়েছে তারা।

এ প্রসঙ্গে সেলেস্টিয়াল ই-মোবিলিটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দুরাইরাজন বলেন, আমরা মেক্সিকোর উৎপাদন শক্তির সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ই-ট্রাক্টর তৈরি ও স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি উত্তর-আমেরিকার অন্য দেশগুলোয়ও বিক্রির চেষ্টা করব। রপ্তানি ও বিক্রয় ছাড়াও গ্রুপ মার্ভেলসার সঙ্গে কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক বিপণন সমন্বয় খুঁজে পেয়েছি আমরা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সেলেস্টিয়াল ই-মোবিলিটি ই-ট্রাক্টর তৈরির লক্ষ্যে কারখানা নির্মাণ করে। সেই সময় সিঙ্গাপুরের একজন অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে মুরুগাপ্পা গ্রুপের অধীন টিউব ইনভেস্টমেন্ট অব ইন্ডিয়া লিমিটেড প্রায় ১৫০ কোটি রুপি বিনিয়োগ করে। তখন প্রতিষ্ঠানটির ৭০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয় মুরুগাপ্পা।

২০১৯ সালে দূষণ রোধে ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরিতে গুরুত্ব দেয় ভারত। এর আগে ২০১৭ সালে ভারতের এক শিল্প সম্মেলনে দেশটির পরিবহনমন্ত্রী নিতিন গাডকারি বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ শতভাগ ইলেকট্রিক গাড়িতে যাবে ভারত। আপনি পছন্দ করুন আর না-ই করুন, আমি এটি করতে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে আমি কাউকে জিজ্ঞেস করতে যাব না। তবে কর্মসংস্থান হ্রাসসহ নানা যুক্তিসংগত কারণে গাডকারি তার কথায় শেষ পর্যন্ত না থাকতে পারলেও জানিয়ে দিয়েছেন শতভাগ না হলেও ২০৩০ সালের মধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ি ৩০ শতাংশ করা হবে। সাম্প্রতিক এক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল নাগাদ ভারতে শুধু ইলেকট্রিক থ্রি হুইলার থাকবে ও ২০২৫ সাল নাগাদ শুধু ইলেকট্রিক টু হুইলার রাখা হবে।

ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারজাত করতে বিভিন্ন উচ্চাকাক্সক্ষী পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে উন্নত দেশগুলো। যেমন যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ২০৪০ সাল নাগাদ প্রথাগত গাড়ি থেকে বেরিয়ে শতভাগ ইলেকট্রিক গাড়িতে আসার ঘোষণা দিয়েছে। তবে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইলেকট্রিক গাড়ির বাজার রয়েছে চীনে। দেশটিতে ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জিং স্টেশনের সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক রয়েছে। ব্যাটারি তৈরিরও সবচেয়ে বড় দেশ চীন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইলেকট্রিক গাড়িতে চীন যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি ভারতও পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়। তাই ২০১৯ সালের ঘোষণার পর ২০২০ সালে সোনালিকা ট্রাক্টর কোম্পানি তাদের ইলেকট্রিক ট্রাক্টর টাইগার লঞ্চ করে। এই ই-ট্রাক্টর ইউরোপের প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়। বর্তমানে ইভি তৈরিতে নিজেদের প্রযুক্তি কাজে লাগাচ্ছে ভারত।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০